ঈদের ছুটিতে দুর্ঘটনা

রাত যত বাড়ে, পঙ্গু হাসপাতালে বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যা

ঈদের দিন রাত ১টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালে রোগীদের ভিড়। ছবি: স্টার

ঈদের ছুটিতেও রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসকদের। শুধু ঈদের দিন ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এই হাসপাতালে। পরদিন সোমবারও ভর্তি হন বহু রোগী। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোগীদের অধিকাংশই, কোরবানি দিতে গিয়ে নানাভাবে আহত এবং মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন।

কয়েকজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, ঈদের সময় অধিকাংশ চিকিৎসক-নার্স ছুটিতে থাকায় এসব রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে তাদের দম ফেলবার সময় থাকে না। 

হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ রোগী এসেছেন ঢাকার বাইরে থেকে। দুর্ঘটনার পর প্রথমে তারা স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে যাওয়ার পর সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

ছবি: স্টার

অনেকে আবার স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে ঢাকায় রওনা দেন। ফলে পঙ্গু হাসপাতালে পৌঁছতে রাত হয়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় একই চিত্র। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের চাপও বাড়তে থাকে পঙ্গু হাসপাতালে।

জাতীয় পঙ্গু হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালক আব্দুল গণি মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঈদের দিন হাসপাতালে রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ৩০০ রোগী এসেছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ গরু কাটতে গিয়ে গরুর লাথিগুতা খেয়ে, অথবা গরুর বানাতে গিয়ে হাতে-পায়ে ছুরির আঘাত পেয়েছেন। বাকিরা মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন দুর্ঘটনা আহত হয়েছেন।'

হাসপাতালের পরিচালকের দাবি, গতবারের তুলনায় এবারের ঈদে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা কম ছিল। সব মিলিয়ে ১০ থেকে ২০ শতাংশের বেশি না। 

তবে, হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহতদের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

পাবনার আটঘরিয়া এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী মো. হাসান (২০) ঈদের দিন আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার সময় আরেকটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পৌঁছান।

হাসানের মামা মজনু শেখ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে রেফার্ড করে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাড় ভেঙে গেছে, এখন অপারেশন করা লাগবে।

হাসপাতালের আরেক রোগী সিরাজগঞ্জের শেজাব আলী (৬০) ঈদের দিন বাসার সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত হয়ে রাতে পঙ্গু হাসপাতালে এসেছেন। এতে তার বাম পা ভেঙে গেলে সিরাজগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হাসপাতালে ভর্তি আরেক রোগী ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের সাথী আক্তার (২৪)। তিনি ও তার স্বামী গাজীপুরের একটি সোয়েটার ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। ঈদের দিন স্বামীর সঙ্গে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সময় তাদের ম্যাক্সি গাড়িটিকে একটি মোটরসাইকেল ধাক্কা দিলে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে। এতে ওই গাড়িতে থাকা ৮ জন আহত হন। পরে তাদের ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

কেরাণীগঞ্জের বাসিন্দা সেলিম (২৮) মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় প্রাইভেটকারে ধাক্কা দিলে আহত হন। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়, পরে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। 

 

    

Comments

The Daily Star  | English

16 killed as police open fire on Gen Z protest in Nepal

Police used live ammunition, tear gas, and water cannons against protesters demonstrating against social media restrictions and corruption

3h ago