শিক্ষক লাঞ্ছিত

নড়াইলের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ

নড়াইলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় জেলার সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন।

এ ছাড়া, ঈদুল আজহার ছুটির শেষে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত ১৮ জুন নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল ভারতের বিতর্কিত বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার সমর্থনে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন। এতে উত্তেজিত ছাত্র ও স্থানীয়রা শিক্ষকদের ৩টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন এবং ছাত্র রাহুলের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরানো হয়।

এ ধরনের আরও একটি ঘটনা মির্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ঘটিয়েছিল বলে জানান জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান।

অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের পর গত ২৮ জুন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মোবাইল ফোন নেওয়া বন্ধ করতে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক এবং মাদ্রাসা প্রধানদের লিখিত নির্দেশনা প্রদান করেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনকালে শিক্ষা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবেন। পরিদর্শনকালে কোনো শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন আনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তারা গোপনে মোবাইল ফোন নিয়ে আসছে এবং ভালো-মন্দ নির্বিশেষে বিভিন্ন বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট, লাইক ও শেয়ার নিয়ে বিব্রতকর ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণি ও মির্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠান দুটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এ অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের দাবি উঠেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের যেসব নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে সেগুলো হলো-

মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই মোবাইল ফোন আনতে পারবে না। মোবাইল না আনার নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়নে শিক্ষকদের পরিশ্রমী হতে হবে এবং প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ পরীক্ষা করা যেতে পারে। কোনো শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তা বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। মোবাইল ফোনের ব্যবহার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না আনার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ঈদের ছুটির পর নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবক সভার আয়োজন করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Ducsu election sees spontaneous turnout of voters

Ducsu election is being held at eight centres of the campus with nearly 40,000 registered voters and 471 candidates vying for 28 central posts.

59m ago