প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে: টিটু

আহসানুল ইসলাম টিটু, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শেখ হাসিনা, চীন, মরিশাস, কম্বোডিয়া,
আহসানুল ইসলাম টিটু। ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরকালে দেশটির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এফটিএ ইস্যুটি আলোচনার এজেন্ডার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। আগামী ৮ জুলাই থেকে প্রধানমন্ত্রীর চার দিনের চীন সফর শুরু হবে।

আহসানুল ইসলাম টিটু গতকাল টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথম দফা আলোচনা এখনো হয়নি, তবে সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা হয়েছে।

মূলত স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) দেশ থেকে উত্তরণের পরও শুল্ক সুবিধা ধরে রাখতে চীনসহ বড় অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, 'চীনের এক্সিম ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল ৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য সুবিধা নিয়ে আলোচনার জন্য আজ বা আগামীকাল ঢাকায় আসছে এবং প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সময়ও এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।'

চীনা মুদ্রা ইউয়ানে দেওয়া ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণের আওতায় স্থানীয় আমদানিকারকরা ইউয়ান দিয়ে চীনের আমদানি বিল পরিশোধের সুবিধা পাবেন।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হলো বাংলাদেশ। শীষ স্থান চীনের দখলে। তবে এই শিল্পের কাঁচামাল ও কেমিকেলের জন্য বাংলাদেশ চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

আবার চীন এখন বাংলাদেশের একক বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ চীন থেকে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলারের কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি, টেক্সটাইল কাপড় ও কেমিকেল, সুতা, ওভেন কাপড়, গার্মেন্টস সামগ্রী এবং খাদ্যদ্রব্য আমদানি করে।

বাংলাদেশের মোট বার্ষিক আমদানি শুল্কের এক তৃতীয়াংশ আসে চীনের আমদানি শুল্ক থেকে। চীনা পণ্য আমদানিতে বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বা ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায় করে বাংলাদেশ সরকার।

তবে ২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গেলে চীনা পণ্য থেকে আমদানি শুল্ক বাবদ এই বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় করতে পারবে না বাংলাদেশ। এছাড়া উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অন্যান্য দেশের জন্য বাংলাদেশকে শুল্ক কাঠামো উদার করতে হবে।

চীন মরিশাস এবং কম্বোডিয়ার মতো দেশসহ ২৯টি দেশের সঙ্গে ২২টি এফটিএ স্বাক্ষর করেছে।

চীনের বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তারা মূলত দুটি কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরে আগ্রহী। প্রাথমিক কারণ হচ্ছে, চীনা উদ্যোক্তারা তাদের পুরনো কারখানা ও অন্যান্য শিল্প বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে চায় এবং উদার শুল্ক কাঠামোর আওতায় চীন থেকে পণ্য পুনরায় রপ্তানি করতে চায়।

এদিকে বৈচিত্র্যময় রপ্তানি পণ্য না থাকায় চীনের ৯৮ শতাংশ শুল্ক সুবিধা কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের মোট বার্ষিক রপ্তানির ৮৪ শতাংশেরও বেশি তৈরি পোশাক পণ্য। যেখানে বিশ্বের বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী চীন বছরে এখান থেকে মাত্র ১০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করে।

Comments

The Daily Star  | English
Former president Hamid airport CCTV footage

The story of Hamid’s exit

Security footage obtained and analysed by The Daily Star shows that Hamid's car reached the barrier gate of the VIP terminal at 12:46am on May 8

13h ago