সবার ভেতরটা ঝাঁঝরা হয়ে গেছে: বাঁধন

বৃহস্পতিবারের কর্মসূচিতে বাঁধন। ছবি: শেখ মেহেদী মোরশেদ

দেশের চলমান ঘটনায় সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার রাজপথে নেমেছিলেন শিল্পী ও পরিচালকরা। বৃষ্টিতে ভিজে তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন, সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে কথা বলেছেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধনও।

কর্মসূচি শেষে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।

আজমেরী হক বাঁধন বলেন, নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ ও নিরস্ত্র সাধারণ ছাত্রদের প্রাণ গেল। যে মুহূর্তে ভিডিওগুলো দেখছিলাম, কষ্ট পাচ্ছিলাম খুব। ছাত্ররা অধিকার চাইতে গিয়ে জীবন দিলো। বাসার ছাদে, বাসার বারান্দায়, রাস্তায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাণ গেল তাদের। এই ঘটনাগুলো দেখে কারও সুস্থ থাকার কথা না। কোনো সুস্থ মানবিক মানুষ এসব ঘটনা দেখে স্বস্তিতে থাকতে পারবেন না।

'এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করছে। সাধারণ নাগরিক হিসেবে অস্থির বোধ করছি। এসব ঘটনা থেকে অনুভব করছি রাষ্ট্র আমার প্রতি সহানুভূতিশীল না। সাধারণ মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল না', বলেন তিনি।

ছবি: সংগৃহীত

গণগ্রেপ্তারের বিষয়ে বাঁধন বলেন, দেশে গণগ্রেপ্তার হচ্ছে। ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। স্বাধীন দেশে এটা হয় না। হতে পারে না। বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক।

'আমি এদেশের সুবিধাভোগী একজন নাগরিক। সুন্দর সামাজিক অবস্থানে আমি আছি। এই সরকারের সময়ে আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। আমার মেয়ের জন্য অধিকার ফিরে পেয়েছি। এই সরকারের নির্বাচনী প্রচারেও অংশ নিয়েছি', বলেন তিনি।

বাঁধন বলেন, আমি একজন সন্তানের মা। সন্তানের মা হিসেবে, স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো মানতে পারছি না। কষ্ট হচ্ছে। সেই তাড়না থেকে রাস্তায় এসেছি। দেখুন, এখনো ছাত্রদের হয়রানি করা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একদিনের নোটিশে আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। এতটা সাড়া পাব ভাবিনি। শিল্পী-পরিচালক থেকে শুরু করে লাইটম্যান, সহকারী পরিচালক, সবার সাড়া পেয়েছি। মোশাররফ করিম ভাইয়ের মতো তারকা অভিনেতা এসেছেন। আশফাক নিপুণ ও অমিতাভ রেজার মতো পরিচালকরা এসেছেন। ইরেশ যাকের, মম, মিথিলাসহ অনেকেই আজকে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন।

'সবার ভেতরটা ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। যেন আমাদের সবার ভেতরে গুলি লেগেছে। নিজেদের অসুস্থ লাগছে সামগ্রিক পরিবেশের জন্য', বলেন তিনি।

ছবি: সংগৃহীত

হঠাৎ করে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে বাঁধন বলেন, 'দেখুন, কোনোরকম ঘোষণা ছাড়াই ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া হলো। তারপর সব গণমাধ্যমে সব খবর জানতে পারিনি। গণমাধ্যমের ওপর যদি অনাস্থা জন্মায়, তখন নাগরিক হিসেবে কী করব? এটা দুঃখজনক। কয়েকটি গণমাধ্যমে সঠিক খবর পেয়েছি।'

ক্ষোভ প্রকাশ করে বাঁধন বলেন, 'আমার ঘরকে তো বিশ্বাস করতে হবে? রাষ্ট্র হচ্ছে আমার ঘর। কেন এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল, তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। হত্যার বিচার করতে হবে।'

সবশেষে তিনি বলেন, 'আমরা যখন রাস্তায় দাঁড়াই, তখন বৃষ্টি নেমেছিল। বৃষ্টির মধ্যেই কথা বলেছি। বাসায় ফেরার পর আমার মেয়ে বলেছে, মা তোমাকে নিয়ে গর্ব হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

55m ago