কাউকে বিশ্বাস করা ঠিক হবে কিনা বুঝবেন যেসব লক্ষণে

বিশ্বাস করা
ছবি: সংগৃহীত

'বিশ্বাস' শব্দটি যেকোনো মানবিক সম্পর্কের খুঁটির মতো। প্রেম, বন্ধুত্ব, পারিবারিক সম্পর্ক কিংবা নিছক শুভাকাঙ্ক্ষী- বিশ্বাসের ভূমিকা সব ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রেই অনেক বেশি স্থান দখল করে থাকে। আর যখন সম্পর্কের ভিতস্বরূপ এই খুঁটি নড়বড়ে হয়ে যায়, তখন সম্পর্কে ফাটল ধরার সঙ্গে সঙ্গে চিড় ধরে মানুষের মনেও।

নিজের মনের খেয়াল রাখতে এবং নিজেকে অবিশ্বস্তদের হাত থেকে বাঁচাতে খেয়াল করতে পারেন এই বিষয়গুলো।

গল্পের খেই হারিয়ে ফেলা

গবেষণায় বলা হয়, মিথ্যাবাদী লোকজন সবসময় তাদের বানোয়াট গল্পের জালটা ঠিকভাবে বুনতে পারেন না। এর মানে হচ্ছে, তারা একাধিকবার একই বিষয়ে মিথ্যা বলতে গিয়ে ভুল করে বসেন। তাই আপনার পরিচিত কেউ যদি একই বিষয়ে গল্প করতে গিয়ে প্রায়ই সে গল্পের নানা দিক বদলে বসে থাকেন, তাহলে সাবধান থাকুন। হতে পারে, তিনি প্রায়ই আপনার সঙ্গে মিথ্যা বলছেন কিংবা সত্যিটা লুকোচ্ছেন। এমন মানুষকে বিশ্বাস করাটা বিপদের কাজ হতে পারে।

কথা ঘুরিয়ে নেওয়া

কেউ যদি সম্পর্কে অনেকটা ঘনিষ্ঠ হওয়ার পরও যেকোনো ব্যক্তিগত প্রশ্নেই উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান কিংবা কথা ঘুরিয়ে অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন- তবে তা সবসময় লাজুক স্বভাব কিংবা ব্যক্তিজীবনের গোপনীয়তা ধরে রাখার উদ্দেশ্যে নাও হতে পারে। অন্যকে ধোঁকা দিতে হলেও মানুষ এ ধরনের কৌশল হরহামেশাই অবলম্বন করে থাকে।

সততা নিয়ে জোরাজুরি

কেউ যদি বারবার নিজের সততার ওপর বারবার জোর দেন এবং যেকোনো অপ্রাসঙ্গিক বিষয়েও শুধু নিজেকে সৎ বলার জন্য অস্থির হয়ে ওঠেন, তাহলে বুঝতে হবে কিছু একটা ঝামেলা রয়েছে। নিজের প্রতি অন্যের যেকোনো প্রকার ছলচাতুরির সন্দেহ সরানোর জন্য সততার জোরপূর্বক চমক দেখানোর মতো ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে আমাদের আশপাশে। এমন অনেকেই আছেন যারা দাবি করেন, 'আমি কখনো মিথ্যা বলি না'। বুঝে নিতে হবে, এটি একটি ডাহা মিথ্যা কথা।

অন্যের প্রতি অসম্মান

নিজের সমমর্যাদাপূর্ণ কিংবা উচ্চাসনে বসা লোকেদের প্রতি তো সামাজিক সৌজন্যে প্রায় সবাই ভদ্রতার চর্চা করে থাকে। কিন্তু প্রকৃত নম্র সেই ব্যক্তি, যিনি তার চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম সামাজিক মর্যাদার ব্যক্তিটিকেও সম্মান দিয়ে কথা বলেন। অফিসের বসের সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক এবং নিজের বন্ধুদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ লোকটিও যদি রিকশাওয়ালা, হোটেলের বেয়ারা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মী ইত্যাদি পেশার মানুষের সঙ্গে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, তাহলে বুঝে নিতে হবে- ব্যক্তিটি আপাদমস্তক প্রতারক প্রকৃতির মানুষ। তিনি শুধু পদমর্যাদার জন্যই মানুষের সঙ্গে মেশেন, তাদের মানবিক কিংবা মানসিক পরিচয়ের দিকে তার নজর কম। তাই এমন মানুষকে বিশ্বাস করা বিচক্ষণের কাজ নয়।

কথা দিয়ে কথা না রাখা

বিশ্বস্ত লোকেরা তাদের প্রতিজ্ঞা পালন করেন। তারা অযথাই শুধু কথা দেওয়ার জন্য কথা দেন না। তারা প্রথমে ভেবেচিন্তে দেখেন যে কাজটি তার পক্ষে করা আদৌ সম্ভব কি না। সম্ভব না হলে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া সাধারণত অবিশ্বাসী লোকের কাজ। এমন লোকের চেয়ে যারা কোনো কাজে সাহায্য করতে না পারলে মুখের ওপর 'না' বলে দেন, তারা অপেক্ষাকৃত বেশি বিশ্বস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পারস্পরিক নির্ভরতার বিষয়টিও ঠিক এমনই।

মাত্রাতিরিক্ত তোষামোদি

প্রশংসা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি বিষয়। কিন্তু যেকোনো বস্তু বা বিষয়ই মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে তার আসল গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে। প্রশংসা যখন মাত্রা ছাড়িয়ে নিছক তোষামোদির কাতারে গিয়ে পৌঁছায়, তখন তা আর বিশ্বাস করা চলে না। তোষামোদকারী ব্যক্তিটিও তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারান। তোষামোদের কারণে কেবল ব্যক্তিস্বার্থের আদান-প্রদানই সম্ভব, এতে করে সত্যিকার অর্থে কারো আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায় না।

 

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia’s body taken to Parliament Complex ahead of janaza

Janaza will be held at Manik Mia Avenue at 2pm

2h ago