এমপি আনার হত্যার ‘অন্যতম কারণ’ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

আনোয়ারুল আজীম আনার। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার পেছনে শুধু সোনা চোরাচালান নয়, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাও মূল কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামাল আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিন্টু বর্তমানে আট দিনের রিমান্ডে এবং বাবু হত্যায় তার ভূমিকার কথা স্বীকার করার পরে কারাগারে রয়েছেন।

শুক্রবার দেওয়া বাবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে তদন্তকারীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের উভয় নেতাই আততায়ীদের টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

তারা আরও জানান, আনারের স্থলাভিষিক্ত হয়ে সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন মিন্টু।

তদন্তকারীরা জানান, ভারত ও বাংলাদেশ পুলিশ গত ২২ মে আনারের হত্যার বিষয়টি জানানোর পর বাবু ও মিন্টু নিহত এমপির বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনাও জানান।

আনার কলকাতায় যাওয়ার ১০ দিন পরে তার মৃত্যুর ঘোষণা আসে এবং এর আগে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

এ ছাড়া সোনা চোরাচালান চক্র থেকে আনার বড় অংশের ভাগ দাবি করে বন্ধু আক্তারুজ্জামানকেও শত্রু বানিয়েছেন বলেও জানান তারা।

আনারকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আক্তারুজ্জামানের ভাড়া করা আমানুল্লাহ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা। ৫ জুন দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আমানুল্লাহ বলেন, চোরাচালান ও জমি দখলের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে ২৬ বছর আগেই তার দল আনারকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।

তদন্তকারীরা বলেছেন, এই দাবিগুলো তারা যাচাই করছেন।

হত্যায় আমানুল্লাহকে সহায়তা করা তানভীর ভূঁইয়া স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ বলেছেন, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব কলকাতায় সমাধান করা হবে বলার পর আনার সেখানে গিয়েছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সম্প্রতি বলেছেন, আমরা কখনো বলিনি আজীমকে সোনা চোরাচালানের জন্য হত্যা করা হয়েছে। আমরা সব সময় বলে আসছি যে তার নির্বাচনী এলাকা অপরাধপ্রবণ। সেখানে কী ঘটেছে তা আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষ হওয়ার পর আমরা আপনাদের বিস্তারিত বলব।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আক্তারুজ্জামানকে ধরার পরই এই রহস্যের জট খুলবে।

ইন্টারপোলকে আক্তারুজ্জামানের জন্য রেড নোটিশ জারি করার অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো অব দ্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।

বিষয়টি জানিয়ে সংস্থাটির সহকারী মহাপরিদর্শক আলী হায়দার চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, 'ইন্টারপোল এখনো তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা বারবার চেষ্টা করছি।'

তদন্তকারীরা আশা করছেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে মূল সন্দেহভাজনকে ফিরিয়ে আনতে পারে। অন্যথায় তদন্ত অসম্পূর্ণ হবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান গতকাল বলেছেন, 'তদন্তে কারো কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ নেই। আমরা স্বাধীনভাবে তদন্ত করছি।'

Comments

The Daily Star  | English
NCP wants July charter implementation order

No end in sight to charter deadlock

With just a day remaining before the interim government’s preferred timeframe for political parties to resolve their differences over the July charter, there are barely any signs that the deadlock is easing.

11h ago