মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরা আবার যাতে রাষ্ট্রক্ষমতায় না আসতে পারে সে সুপারিশ করেছি: বদিউল আলম মজুমদার

বদিউল আলম মজুমদার। ছবি: টিভি থেকে নেওয়া

যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, খুন করেছে, গুম করেছে, বিভিন্নভাবে বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের নীতিনির্ধারণের ব্যাপারে আবার দায়িত্বে আসা এটা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'যত জায়গায় গিয়েছি মানুষের কাছে এই আকুতি শুনেছি, আবার যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সেজন্য আমরা কতগুলো প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা আশা করি সরকার গ্রহণ করবে।'

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'আমরা কাউকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চাই না। এটা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু আমরা কি চাই যারা আমাদের নাগরিকদের যেভাবে খুন করেছে প্রায় দেড়-দুই হাজার ব্যক্তি খুন হয়েছেন। যারা গুম হয়েছেন। যারা বিভিন্নভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। আমরা কি চাই তারা আবার এসে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করুক? আমি তো মনে করি অধিকাংশ জনগণই চায় না। আমরা তাই প্রস্তাব করেছি। সেগুলো গৃহীত হবে কি না হবে সেটা নির্ভর করবে আমাদের রাজনৈতিক দল ও সরকারের ওপর।'

বদিউল আলম বলেন, 'একইসাথে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনও যে দুর্বৃত্তের কবলে পড়ে গিয়েছে এজন্য আমরা যারা অপরাধী তারা যেন রাজনৈতিক দলের সদস্য না হতে পারে তার সুপারিশ করেছি। আমরা রাজনৈতিক দলের মেম্বারশিপ রোস্টার করার প্রস্তাব করেছি।'

'এই মেম্বারশিপ রোস্টার ব্যবহার করেই তারা স্থানীয় পর্যায়ে তাদের দলীয় নেতাকর্মীরাই মনোনয়ন ব্যাপারে একটা প্যানেল দেবে। এবং প্যানেল থেকে জাতীয় মনোনয়ন বোর্ড সেখান থেকে মনোনয়ন দেবে। যাতে রাজনৈতিক দলগুলো দায়বদ্ধ হয় তাদের সদস্যদের কাছে।'

তিনি বলেন, 'আমরা বলেছি রাজনৈতিক দলগুলো যাতে আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। আপনারা জানেন যে আমি একটা মামলা করেছিলাম নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে, তথ্য কমিশনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের হিসাব নিকাশ পাওয়ার ব্যাপারে। বহু হয়রানির পর শেষ পর্যন্ত আমি আদালতে গিয়েছি এবং একটা যুগান্তকারী রায় দিয়েছে আদালত। যেসব তথ্য তাদের কাছে এগুলো পাবলিক ইনফরমেশন এবং এগুলো তারা প্রকাশ করতে বাধ্য।'

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়বদ্ধ হতে হবে, স্বচ্ছ হতে হবে।

'রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সদস্যদের কাছ থেকে যে সদস্য ফি নেবে, তাদের যে অনুদান আসবে তার একটি সীমা আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি। তার ভিত্তিতে তারা ব্যয় করবে। এর অডিট হিসাব তারা নির্বাচন কমিশনে দেবে এবং নির্বাচন কমিশন এগুলো প্রকাশ করতে বাধ্য হবে।'

রাজনৈতিক দলের আর্থিক স্বচ্ছতা, গণতন্ত্রের চর্চা এবং দায়বদ্ধতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক অঙ্গন পরিচ্ছন্ন করার ব্যাপারে আমাদের সুপারিশ দিয়েছি এবং ইসিকে আমরা ক্ষমতায়িত করার চেষ্টা করেছি। যেমন প্রার্থী চূড়ান্ত করার ব্যাপারে ইসির নিরঙ্কুষ ক্ষমতা, হলফনামা ছকের পরিবর্তনের কথা বলেছি। নির্বাচনের পরে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন সঠিক হয়েছে এটা সার্টিফাই করবে।'

নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যাপারেও কতগুলো সুপারিশ করেছি আমরা, বলেন বদিউল আলম মজুমদার। 

তিনি বলেন, 'সুষ্ঠু অর্থবহ নির্বাচনের জন্য আমরা 'না' ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব করেছি, হলফনামার ছকের পরিবর্তন আনা এবং হলফনামা যাচাই-বাছাই করা এবং যাচাইয়ের সময় যদি অসত্য তথ্য বা তথ্য গোপনের অভিযোগ ওঠে তাদের মনোনয়ন বাতিল, নির্বাচন বাতিল এবং নির্বাচন একবার বাতিল হলে আদালতের মাধ্যমে তারা যেন আর নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে এর সুপারিশ করেছি।

তিনি জানান, 'আমরা ৪০ শতাংশের নিচে ভোট পড়লে পুনর্নিবাচনের কথা বলেছি।'

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

6h ago