ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করুন: তারেক রহমান

ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, 'দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১০ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। ফলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে এবং এই অনিশ্চয়তা সৃষ্টির কারণেই দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।'

তিনি বলেন, 'আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আবারও আহ্বান জানাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করুন, অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন।'

'এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জয় বা পরাজয়ের কোনো কিছুই নেই। বরং স্বাধীনতা প্রিয় জনগণকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকেই বিজয়ী করুন,' যোগ করেন তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি আয়োজিত এই সভায় তারেক রহমান প্রধান আলোচক হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, 'রাষ্ট্র ও সরকার যাতে স্বৈরাচারের কবলে না পড়ে, এ কারণেই রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি। জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একমাত্র রাষ্ট্র ও সরকারকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ করা যায়।'

'একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে বর্তমানে। গণঅভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়া এই সরকার হয়তো বৈধ। তবে এই সরকার কোনোভাবেই কিন্তু জবাবদিহিমূলক নয় এবং জনগণের কাছে এই সরকারের জবাবদিহি করার কোনো সুযোগও নেই,' বলেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, 'জনগণের ভোটে নির্দিষ্ট মেয়াদের একটি স্থিতিশীল সরকার না থাকায় দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না। আমরা এখানে উপস্থিত প্রায় প্রত্যেকেই গণমাধ্যমে খবরে দেখেছি, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, নানা কারণে ইতোমধ্যেই শত শত শিল্প কল-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরও অনেক কল-কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সেক্টরে এ ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণ তাদের সমস্যা-সম্ভাবনার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার বা বলার কোনো সুযোগ পাচ্ছে না।'

তিনি আরও বলেন, 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে স্বাভাবিক কারণেই জনগণের কোনোই যোগাযোগ নেই। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সমস্যা-সম্ভাবনা কিংবা দুঃখ-দুর্দশা সম্পর্কে অনেক উপদেষ্টাই অবগত নন। অফিসে বসে ফাইলপত্র দেখে জনগণের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা হয়তো কেউ কেউ করছেন। জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছাড়া প্রশাসন নির্ভর, ফাইল নির্ভর বা ফাইলওয়ার্ক দিয়ে সব সমস্যার সমাধান যদি করা যেতই, তাহলে তো নিশ্চয়ই রাজনৈতিক দল বা রাজনীতির প্রয়োজন হতো না।'

'দেশের জনগণ সরাসরি নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে প্রস্তুত। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মনে হয় জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে,' মন্তব্য করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, 'গণতন্ত্রের পক্ষের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংস্কারের ব্যাপারে কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের তেমন কোনো আপত্তি নেই। তবে সংস্কার নিয়ে সরকারের অযথা সময়ক্ষেপণে আপত্তি অবশ্যই রয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Industrial output soars, but where are the jobs?

Over the past decade, more and more industries have sprung up across the country, steadily increasing production. But while output rose, factories did not open their doors to more workers.

9h ago