এমন দারুণ দিনেও মিশে থাকল আক্ষেপ

Mominul Haque & Liton Das
মুমিনুল হক ও লিটন দাস দুজনেই দারুণ খেলেও হাতছাড়া করেছেন সেঞ্চুরি। ছবি: টুইটার

পুরো দিনে উইকেট পড়ল ৪টি, রান হলো ২২৬। এখনো ৪ উইকেট বাকি রেখে বাংলাদেশের লিডও হয়ে গেছে  ৭৩ রানের। নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে এমন একটি দিন কেবল দিবাস্বপ্নেই দেখা যেত। বাস্তবে সেটা ধরা দেওয়ার পরও মিশে থাকছে আক্ষেপ। কারণ যে দুজনের কারণে এমন সুখময় পরিস্থিতি তারা নিজেদের ইনিংসে যে দিতে পারলেন না পূর্ণতা। লিটন দাস ও মুমিনুল হক তাই  শীতের সকাল মিষ্টি রোদে রাঙালেন আবার হাহাকারও তৈরি করলেন।

মাউন্ট মাঙ্গানুই টেস্টে টানা আরেকটি দিন নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের রান  ৬ উইকেটে ৪০১ । নিউজিল্যান্ডের ৩২৮ রান পেরিয়ে ৭৩ রানের লিড হয়ে গেছে।

দলকে শক্ত অবস্থায় এনে দেওয়ার এক কারিগর অধিনায়ক মুমিনুল থামেন ২৪৪ বলে ৮৮ রানে। চোখ ধাঁধানো ব্যাট করতে থাকা আরেক কারিগর লিটন ১৭৭ বলে ৮৬ রান করে ছুঁড়ে দেন উইকেট। আরও একটি টেস্ট শতক থেকে দুজনেই ফেরেন হাত ছোঁয়া দূরত্বে।

লিটন ছিলেন বরাবরের মতই নান্দনিক। শুরু করেন অনেকটা ওয়ানডে ঘরানায়। প্রায় বলে রানে করে নিচ্ছিলেন তিনি। চল্লিশের ঘর পেরিয়ে যাওয়ার পর একটু গুটিয়ে রাখেন নিজেকে। পঞ্চাশ পেরিয়ে ফের মেলেন ডানা।

মুমিনুল শুরু থেকেই ছিল সতর্ক। দিনের প্রথম ঘন্টায় কেবল ১ রান নিয়েছিলেন তিনি।  ৯ রানে ওয়েগনারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচও দিয়েছিলেন। নো বলের কারণে বেঁচে যান বাংলাদেশ কাপ্তান।

দিনের শুরুটা হয় মাহমুদুল হাসান জয়ের আউটে। ৭৮ রান করা এই ওপেনার আগের দিনের মতো দৃঢ়তা আর এদিন দেখাতে পারেননি। ক্রিজে নেমেই ছটফট করছিলেন। ওয়েগনারের অনেক বাইরের বল তাড়া করে গালিয়ে ক্যাচ দিয়ে থামে তার ছটফটানি।

মুশফিকুর রহিম ক্রিজে এসেও ছিলেন ধীরস্থির। থিতু হতে নেন অনেক সময়। তবে লাভ হয়নি। ৫৩ বলে ১২ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে ফ্লিকের মতো করতে গিয়ে লাইন মিস করে হন বোল্ড। 

লাঞ্চের আগে বেশ মন্থর গতিতে খেলেছিল বাংলাদেশ। লাঞ্চের আগে ২৬ ওভারে খেলে ২ উইকেট হারিয়ে  তুলেছিল ৪৫ রান। লাঞ্চের পরের ২৬ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে আসে আরও ৮৭ রান।

লাঞ্চের পর নেমে নিউজিল্যান্ড পেসাররা বেশ কিছু আলগা বল দেন, পুরো ফায়দা তুলে নেয় বাংলাদেশ। ক্রিজে নেমেই স্বভাবসুলভ গতিতে দ্রুত রান আনতে থাকেন লিটন। শম্ভুক গতি ভেঙ্গে মুমিনুলও বাড়ান রানের গতি।

দ্বিতীয় সেশন শেষে নিউজিল্যান্ড থেকে ২১ রান পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। চা-বিরতির পর সেই রান চলে আসে দ্রুত। লিটন-মুমিনুল যেভাবে খেলছিলেন মনে হচ্ছিল না আর কোন উইকেটই পড়বে।

বিরামহীন একের পর এক স্পেলে বল করেও তাদের টলাতে পারছিলেন না ওয়েগনার। একাধিক স্পেলে বল করেও বিফল হন টিম সাউদি। বোল্ট প্রথম স্পেলে উইকেট পেলেও পরে তিনিও সুবিধা করতে পারছিলেন না।  তবে দিনের শেষ ভাগে কাজের কাজ করলেন এই বাঁহাতিই।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৫৮ রান আসার পর বোল্টের ভেতরে ঢোকা বলে পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। লিটন অবশ্য ফেরেন বাজে শটে। বোল্টের অনেক বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।  প্রথম সেশনের মতো শেষ সেশনেও ওই দুই উইকেট। সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৩১ রান এনেছেন ইয়াসির আলি রাব্বি ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ইয়াসির ১১ আর মিরাজ খেলছেন ২০ রান নিয়ে। অন্তত দেড়শো রানের লিড এনে দিতে চতুর্থ দিন সকালে এই দুজনের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

(তৃতীয় দিন শেষে)

নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৩২৮

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৫৬  ওভারে ৪০১/৬   (সাদমান ২২, জয় ৭৮, শান্ত ৬৪, মুমিনুল ৮৮  মুশফিক ১২, লিটন ৮৬, ইয়াসির ১১* , মিরাজ ২০* ; সাউদি  ০/৯৪, বোল্ট ৩/৬১, জেমিসন ০/৭২, ওয়েগনার  ৩/৯৮, রবীন্দ্র ০/৬৪)

Comments

The Daily Star  | English

Expatriates' remittance helps Bangladesh make turnaround: Yunus

It is the expatriates who help sustain the country, says the chief adviser

7h ago