কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্থায়নে নিয়ম শিথিল

ছবি: সংগৃহীত

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানি কেনার জন্য ঋণ প্রদানের সুবিধার্থে এই খাতে অর্থায়নের নিয়ম শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে, ঋণদাতারা তাদের মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি বিতরণ করতে পারে না।

তবে, গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া বাংলাদেশে ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্থায়নের এ ঊর্ধ্বসীমা আগামী ৫ বছরের জন্য প্রযোজ্য হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হওয়ায় তারা নিয়মটি শিথিল করেছেন।

এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সময়ে এই উদ্যোগ নিয়েছে, যখন গ্যাসের ঘাটতির কারণে দেশে ২৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র অর্ধেক উৎপাদন হচ্ছে।

বর্তমানে দেশে ২টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে এবং খুলনার রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি ইউনিট চলতি বছর চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ ছাড়া, সরকারি খাতের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো পটুয়াখাই, মাতারবাড়ি ও চট্টগ্রামে ৩ হাজার ৮৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।

এর বাইরে এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার একটি কয়লাভিত্তিক প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম তামিম বলেন, 'সরকার হয়তো ভাবছে কয়লাভিত্তিক প্ল্যান্টের মাধ্যমে আরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা প্রয়োজন। এটি একটি পরোক্ষ নীতিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থায়নে যে শিথিলতা দিয়েছে সেটা সম্ভবত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা কেনার সুবিধার্থে।'

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য তহবিল গঠনের যে উদ্যোগ, তার বিরুদ্ধে যায়।'

তিনি বলেন, 'একক ঋণগ্রহীতার জন্য সীমা শিথিল নিয়ে প্রশ্ন ওঠে যে এই সিদ্ধান্ত একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা ব্যক্তিদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হয়েছিল কি না। এই মুহূর্তে দেশে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে এবং দেশ বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিতে রয়েছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে ঋণ দেওয়ার নিয়ম শিথিল করা অগ্রহণযোগ্য।'

মোয়াজ্জেম জানান, একক ঋণগ্রহীতাদের ঋণ দেওয়ার জন্য বর্তমান ২৫ শতাংশ সীমার মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার পরিচালন ব্যয় মেটাতে হবে।

তিনি বলেন, 'পরিচালনা ব্যয় মেটানোর জন্য বর্তমান নিয়মগুলোই যথেষ্ট ছিল। সেগুলোকে আরও শিথিল করার দরকার ছিল না।'

Comments

The Daily Star  | English
Gunfight

Local BNP leader shot dead in Dhaka’s Badda

When Kamrul was sitting on a chair on the roadside and talking with 2-3 people, two assailants on foot came from behind and shot him before fleeing the scene

56m ago