রিমোট ওয়ার্কিংয়ের ভালো-মন্দ 

সময়ের সঙ্গে কাজের ধরনও পাল্টাচ্ছে দ্রুতগতিতে। অফিসের ৪ দেয়ালের গণ্ডি পেরিয়ে মানুষ এখন বাসায় বসেই কাজ করতে পারছে। প্রযুক্তির বিকাশ ও সামাজিক অগ্রগতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বিশ্বজুড়ে কাজের জগতে এই পরিবর্তন এসেছে। তবে কাজের পরিবেশের এই আমূল পরিবর্তনের সুবিধা যেমন আছে, আছে কিছু অসুবিধাও।

 

সুবিধা

কাজের কথা চিন্তা করলে প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে কোনো ৪ দেয়ালে ঘেরা স্থানে সপ্তাহের ৫ দিন ৯টা থেকে ৫টা অবধি কাজ করার দৃশ্য। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে মানুষ অফিসের বাইরে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করার সুবিধা পাচ্ছে। এর পেছনে বড় কারণ অবশ্য কোভিড-১৯, যা প্রথাগত অফিসের বাইরে থেকেও যে কাজ করা সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছে। 

এ ধরনের কাজে বেশকিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন- কর্মীরা যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় বসে কাজ সেরে ফেলতে পারেন। অর্থাৎ কর্মীরা নূন্যতম কর্মঘণ্টা নীতি মেনে নিজের সুবিধা অনুযায়ী দিনের যেকোনো সময়কে কাজের জন্য বেছে নিতে পারেন। এ কারণেই বেশিরভাগ মানুষ অফিসের বাইরে কাজ করার সুবিধা খোঁজেন।

অফিসের বাইরে কাজ করার সুবিধা পেলে কর্মীদের কাজের গতিও বাড়তে থাকে। এ ক্ষেত্রে কাজের জন্য যাবতীয় জিনিসপত্র হাতের কাছেই থাকায় অন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো জায়গায় যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ যানজটের ঝামেলা পোহাতে হয়, সেখানে অফিসের বাইরে কাজের সুবিধা না থাকলেই নয়। এতে অফিসের পরিবেশের চিন্তা করতে হয় না বলে কর্মীরা তাদের কাজে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারেন এবং এটি কাজের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে।

রিমোট ওয়ার্কিং প্রতিষ্ঠানের জন্যও বেশ সুবিধার। এতে নির্দিষ্ট সীমানায় আটকে না থেকে বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়ার সুবিধা পাওয়া যায়। এটি একদিকে যেমন সহযোগিতা এবং নতুন বিষয় আবিষ্কারের সুযোগ করে দেয়, তেমনি কাজের জগতে পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরিতে উৎসাহ দেয়।

অসুবিধা

এ ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন- অফিসের বাইরে কাজ করলে নিজেকে কখনো কখনো একা ও বিচ্ছিন্ন মনে হতে পারে। মানুষ সামাজিক প্রাণী এবং স্বাভাবিকভাবেই অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে মানুষের আগ্রহ কাজ করে। কিন্তু অফিস থেকে দূরে বা বাসায় বসে কাজ করলে এটি থেকে বঞ্চিত হতে হয়। কোভিড-১৯ এর সময়টাই তার বড় প্রমাণ। অত্যধিক বিচ্ছিন্নতা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।

কাজের সময়সূচি নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্ধারণ করাটা ভালো মনে হলেও, এটি বিপরীত ফলও দিতে পারে। মাঝে মাঝে কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। ঠিকভাবে সীমানা নির্ধারণ করতে না পারলে কাজ থেকে নিজেকে আলাদা করা কঠিন হয়ে যায়, যা পরে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এটি এড়াতে চাইলে কাজের একটি সময়সূচি মেনে চলতে হবে। 

অফিসের বাইরে কাজ করার রীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং এটির সুযোগ বৃদ্ধি করতে নিজেদের মানসিকতা পরিবর্তন এবং প্রতিনিয়ত শেখার দিকে যেতে হবে। দূরবর্তী স্থানে থেকে নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নে ব্যক্তি পর্যায়ে কাজ করতে হবে। দূরে বসে কাজ করা কর্মীদের সাহায্য করার জন্য প্রতিষ্ঠানকেও প্রয়োজনীয় কাঠামো প্রণয়ন ও বিনিয়োগ করতে হবে।

অনুবাদ করেছেন আসরিফা সুলতানা রিয়া

Comments

The Daily Star  | English
A bitter brew: Climate change and the decline of Sylhet’s tea gardens

A bitter brew: Climate change and the decline of Sylhet’s tea gardens

Projections by the United Nations Food and Agriculture Organization (FAO) indicate that tea cultivation areas could shrink by 2050.

7h ago