ঢাকা মেডিকেলকে শিগগির ৪ হাজার শয্যার হাসপাতাল করা হবে: প্রধানমন্ত্রী

পদ্মায় রেল সংযোগ উদ্বোধন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ৪ হাজার শয্যার আধুনিক হাসপাতালে পরিণত করা হবে, কারণ হাসপাতালটি ক্রমবর্ধমান রোগীর চিকিৎসায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

সরকার প্রধান বলেন, 'ঢাকা মেডিকেলে ক্রমবর্ধমান রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া খুবই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। তাই, আমরা ঢাকা মেডিকেলকে সুন্দর, আধুনিক এবং বড় হাসপাতালে পরিণত করার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছি। কারণ, এই হাসপাতাল থেকে যেন একই সময় ৪ হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারে।'

প্রধানমন্ত্রীর আজ সোমবার নিজ কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৭৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণকালে এ কথা বলেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ অ্যালামনাই ট্রাস্ট কলেজের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

তিনি বলেন, 'আমরা আশা করি, আমরা খুব শিগগির (ঢাকা মেডিকেলকে ৪ হাজার শয্যার হাসপাতালে পরিণত করার) কাজ শুরু করতে পারব।'

শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিজ্ঞান সামনের দিনগুলোতে বিকাশ লাভ করবে। তাই বাংলাদেশকেও একই গতি বজায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে।

চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণার সংখ্যা আমাদের দেশে কম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মুষ্টিমেয় সংখ্যক ব্যক্তি চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণায় নিয়োজিত আছেন।'

তিনি বলেন, 'কাজেই, চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার প্রতি আমাদের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। কারণ বর্তমান যুগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর পর্যাপ্ত গবেষণা খুবই প্রয়োজনীয়।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার স্বাস্থ্যখাতের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর ব্যাপক গবেষণা চালাতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দেবে।

তিনি আরও বলেন, 'চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিস্তারিত গবেষণার জন্য যে পরিমাণ তহবিলের প্রয়োজন, আমি আপনাদের তা দেব।'

তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তা বিপুল সংখ্যক মানুষকে আধুনিক চিকিৎসা প্রদানের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে।

প্রধানমন্ত্রী রোগীদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, 'ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগীরা সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছে।' 

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ৫০টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করছে।

তিনি বলেন, তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সারাদেশের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনতে বঙ্গবন্ধু প্রতিটি ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করেছিলেন।

তিনি বলেন, উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু শিশু হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও গণস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট নির্মাণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রতিটি ধাপে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অনুসরণ করে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, তার সরকার স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত করতে বেশ কিছু বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার চিকিৎসা-সেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে একটি সমীক্ষা চালিয়ে কিছু জেলায় ১০০ শয্যার হাসপাতালকে ২৫০ ও ৫০০ শয্যার হাসপাতালে পরিণত করেছে।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা স্বাস্থ্যসেবাকে সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি।'

এ সময় শেখ হাসিনা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, বেশ কয়েকটি জেলা হাসপাতালে অ্যানেস্থেসিওলজিস্টের অভাবের কারণে কোনো অস্ত্রোপচার করা হয় না। এছাড়া, অনেক আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না।

তিনি চিকিৎসকদের গ্রামীণ এলাকায় না থাকার মানসিকতার সমালোচনা করে বলেন, এ কারণে গ্রামের লোকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'সবাই (চিকিৎসকরা) ঢাকায় থাকতে চায়, তাদের কেউ ঢাকার বাইরে যেতে চায় না। যখন আপনাকে গ্রামে পোস্টিং দেওয়া হবে, তখন সেখানে থেকেই আপনাকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।'

তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিষয়টির প্রতি যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে।

শেখ হাসিনা চিকিৎসকদের স্মরণ করিয়ে দেন যে তার সরকার প্রতিটি নাগরিক সুযোগ-সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিচ্ছে, যেন গ্রামের বাসিন্দারা নগরের বাসিন্দাদের মতো সুবিধা উপভোগ করতে পারে।

ডিএমসি অ্যালামনাই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. জুলফিকার রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Private investment sinks to five-year low

Private investment as a percentage of the gross domestic product has slumped to its lowest level in five years, stoking fears over waning business confidence and a slowdown in job creation.

10h ago