নিজের সুবিধার জন্য ঐক্যের কথা বললে ঐক্য হয় না: আমীর খসরু

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

যারা গণতন্ত্রের কথা বলছে, তারা নির্বাচনের দিকে যেতে চাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি আরও বলেছেন, নিজের সুবিধার জন্য ঐক্যের কথা বললে ঐক্য হয় না।

আজ সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে অনলাইন নিউজ পোর্টাল 'শীর্ষ নিউজ ডটকম' এর নতুন যাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, 'আমি কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য যদি জাতিকে বিভক্ত করি, সেটা কি ভালো কাজ হবে? যারা এই কাজগুলো করছে, তারা জাতিকে বিভক্ত করছে। শেখ হাসিনার পতনের পেছনে সমগ্র জাতির বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের কৃতিত্ব আছে।'

তিনি বলেন, 'এখন ঐক্যের কথা আমরা বলি, অনৈক্য তো এখানেই সৃষ্টি হচ্ছে। যারা অবদান রেখেছে, তাদের কৃতিত্ব না দিলে, কিছু লোক যদি মনে করে, আমাদের জন্য শেখ হাসিনা চলে গেছে—এটা বিশ্বাসযোগ্য কথা হবে কোনোদিন?'

'ঐক্যের জন্য মনমানসিকতা থাকতে হবে। গণতান্ত্রিক মানসিকতা থাকতে হবে। জনগণের মালিকানার কথা মাথায় রেখে ঐক্যের কথা বলতে পারেন। আপনার সুবিধার জন্য ঐক্যের কথা বললে তো সেটা ঐক্য হয় না। আপনি একদিকে সব কৃতিত্ব নিয়ে যাবেন সবাইকে অস্বীকার করে, আপনি গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে চাইবেন না, জনগণের নির্বাচিত সরকার চাইবেন না, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে চাইবেন না, গণতন্ত্র-সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনকে মুখোমুখি করবেন—কেন,' প্রশ্ন রাখেন তিনি।

খসরু বলেন, 'যখন আন্দোলন তুঙ্গে, সারা দেশের মানুষের শঙ্কা ছিল সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী হবে। সেনাপ্রধানের বক্তব্য শোনার জন্য সারা বিশ্ব বসে আছে। সেনাপ্রধান শেখ হাসিনার প্রস্থানে বক্তৃতা দিয়েছেন, তখন আমাদের ভালো লেগেছে না? খুবই ভালো লেগেছে। সবাই বুঝেছে, সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।'

'আজকে সেনাবাহিনী যদি গণতন্ত্রের কথা বলে, নির্বাচনের কথা বলে, এর থেকে স্বাগত জানানোর নাই কিছু আমাদের। আমি বিশ্বের কোনো সেনাপ্রধানকে এ কথা বলতে শুনিনি। যেখানে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে, ক্ষমতা আবার দখল করতে চায়, ক্ষমতায় থাকতে চায়, সেখানে সেনাবাহিনীর প্রধান বলছেন আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশ চাই। আমরা জনগণের নির্বাচিত সরকার দেখতে চাই। বলছেন, দেশ পরিচালনা করবে নির্বাচিত সরকার, রাজনীতিবিদরা দেশ পরিচালনা করবে। বিশ্বের কোনো সেনাবাহিনী বলেছে এ কথা,' প্রশ্ন রাখেন তিনি।

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আররও বলেন, 'আজকে উনি (সেনাপ্রধান) আমাদের নিশ্চিত করছেন, বাংলাদেশে আর কোনোদিন সেনাবাহিনী আসবে না, আসা উচিৎ না। বাংলাদেশ চলছে রাজনৈতিক নেতৃত্বে, গণতান্ত্রিকভাবে। সেনাবাহিনীর কোনো ভূমিকা নাই। এ কথা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আসছে।'

'আর যারা গণতন্ত্রের কথা বলছে, তারা গণতন্ত্রের দিকে যেতে চাচ্ছে না, তারা নির্বাচনের দিকে যেতে চাচ্ছে না।'

খসরু বলেন, 'আমরা এখনো এই সরকারকে সমর্থন করছি, কারণ আমাদের সবার সমর্থনে এই সরকার বসেছে। যারা সেদিন এই সরকারকে বসিয়েছে, তাদের কতজন ওই ঐক্যের মধ্যে আছে? কেন থাকবে না? না থাকলে কাকে দোষারোপ করবেন? ঐক্য কারা ভাঙছে, তারা কি গণতন্ত্রের বিপক্ষের শক্তি? তারা কি নির্বাচন ভয় পায়?'

তিনি বলেন, 'আমি কবে জনপ্রিয় হয়ে উঠব, আমাদের কখন সুযোগ হবে, জনগণ কখন আমাদের নির্বাচিত করতে পারে এটার জন্য বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা আমি কেড়ে নিতে পারবো না। তার গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক-সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে পারবো না।'

Comments

The Daily Star  | English

Tug-of-war over water lily continues

The Election Commission and National Citizen Party remain locked in a heated debate over the party’s choice of electoral symbol, the water lily -- a dispute that began in June.

4h ago