এফ-১৬ যুদ্ধবিমান আসার আগে ইউক্রেনের বিমানঘাঁটিতে রুশ হামলা

২০২৪ এর জুলাইতে ইউক্রেন পেতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। ছবি: রয়টার্স
২০২৪ এর জুলাইতে ইউক্রেন পেতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। ছবি: রয়টার্স

এ মাস থেকে ইউক্রেনকে বহুল প্রত্যাশিত মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে শুরু করবে মিত্র দেশগুলো। তবে এই বিমানগুলো কোথায় রাখা হবে তা এখনো জানায়নি কিয়েভ। তা সত্ত্বেও, সম্ভাব্য বিমানঘাঁটিগুলোতে আগাম হামলা চালাতে শুরু করেছে রাশিয়া।

আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

গত ২৭ জুন ঠিক সূর্যোদয়ের আগে বিস্ফোরণের দমকে কেঁপে ওঠে পশ্চিম ইউক্রেনের ছোট শহর স্তারোকস্তিয়ানতিনিভ। রুশ যুদ্ধবিমান হামলা ঠেকাতে ইউক্রেনের আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সচল হয়। শহরটি ছোট হলেও এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিমানঘাঁটির অবস্থান। ২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এই ঘাঁটি নিয়মিত হামলার শিকার হয়েছে।

গত দুই বছরের নিরবচ্ছিন্ন রুশ হামলার মোকাবিলায় কিয়েভের বিমানবাহিনীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে বললেই চলে। মিত্র দেশের কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করে বিমানবহর পুনর্গঠনের অপেক্ষায় রয়েছে কিয়েভ। নি:সন্দেহে রাশিয়া চাইবে এই অত্যাধুনিক মার্কিন বিমান আকাশে ওড়ার আগেই একে অকেজো করতে।

ইউক্রেনকে প্রতিশ্রুত এফ-১৬ বিমানের প্রথম চালানটি এ মাসেই এসে পৌঁছানোর কথা।

ইউক্রেন আশা করছে, যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন এই বিমানগুলো পরিষ্কার ব্যবধান সৃষ্টি করতে পারবে এবং সার্বিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় থাকা সেনাদের মনোবল চাঙ্গা করবে। বিশেষত, রাশিয়ার ব্যবহৃত গ্লাইড বোমা ঠেকাতে এই বিমানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে—এমন আশা কিয়েভের।

কিয়েভের কর্মকর্তারা জানাননি এফ-১৬ বিমানগুলো কোথায় রাখা হবে, তবে গত বৃহস্পতিবার স্তারোকস্তিয়ানতিনিভের হামলার পর মস্কো জানিয়েছে, তারা সম্ভাব্য বিমানঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।

স্তারোকস্তিয়ানতিনিভের বিমানঘাঁটিতে রাখা ইউক্রেনের এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান। ফাইল ছবি: রয়টার্স
স্তারোকস্তিয়ানতিনিভের বিমানঘাঁটিতে রাখা ইউক্রেনের এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এর আগে এই একই বিমানঘাঁটিতে ড্রোন ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

স্তারোকস্তিয়ানতিনিভ একটি ঐতিহাসিক সামরিক ঘাঁটি। এখানে ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করেন, যারা নিজেদেরকে 'স্টারকন' হিসেবে পরিচয় দেন। ইউক্রেনের খেমেলনিতস্কি প্রদেশে অবস্থিত এ অঞ্চলের মানুষ নিরন্তর বিপদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন।

ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র জানান, এসব হামলায় 'কিছু জটিলতার' সৃষ্টি হয়েছে, তবে এতে এফ-১৬ এসে পৌঁছানো বা যুদ্ধে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া খুব সম্ভবত বিমানঘাঁটির রানওয়ে বা বিমান রাখার জায়গাগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে, যাতে এফ-১৬ ওড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে।

রয়াল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের বিশ্লেষক জাস্টিন ব্রংক জানান, ইউক্রেনের হাতে আকাশ হামলা প্রতিরোধে ব্যবহৃত গোলাবারুদ ফুরিয়ে এসেছে। যার ফলে, এফ-১৬ এসে পৌঁছালেও বারবার এগুলোকে এক ঘাঁটি থেকে আরেক ঘাঁটিতে স্থানান্তর করতে বাধ্য হবে কিয়েভ।

'ইউক্রেনের যেকোনো স্থল-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে রাশিয়ার। কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে যথেষ্ঠ ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়লেই তা সম্ভব', যোগ করেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবারের হামলার পর গভর্নর সের্হি তিউরিন জানান, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নয়টি ড্রোন ধ্বংস করেছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Victory day today: A nation born out of blood and grit

The tide of war had turned by mid-December in 1971. The promise of freedom was no longer a dream. It had hardened into tangible certainty.

8h ago