নিউজিল্যান্ডের মাঠে প্রথম ওয়ানডে জয়

বোলিং নিয়ে গর্বিত শান্ত কাউকে আলাদা কৃতিত্ব দিতে চান না

Najmul Hossain Shanto

যাদের দেশে গিয়ে ১৬ বছর ধরে কেবল হারতে হয়েছে, সেই নিউজিল্যান্ডকে এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবনাতেও আসেনি নাজমুল হোসেন শান্তর। বোলারদের এমন পারফরম্যান্সে তাই গর্ব হচ্ছে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের। এমন দিনে একা কাউকে কৃতিত্ব না দিয়ে প্রত্যেক বোলারের প্রশংসা করছেন তিনি। 

শনিবার নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ায় বাংলাদেশ। পেসারদের তোপে স্বাগতিকদের মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে জয়টা আসে দাপট দেখিয়ে। এই জয়ের মাহাত্ম আলাদা কারণ নিউজিল্যান্ডের মাঠে ২০০৭ সাল থেকে ১৮ ওয়ানডে হারের পর এই প্রথম জিতল বাংলাদেশের কোন দল।

এদিন নেপিয়ারে সকালে আকাশ ছিলো মেঘলা, উইকেটে রাখা হয়েছিলো হালকা ঘাস। এমন কন্ডিশনে টস ভাগ্য পক্ষে আসায় অনুকূল পরিস্থিতিতি পান বাংলাদেশের পেসাররা।

তিন নিয়মিত পেসার শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান আর তানজিম হাসান সাকিবের সঙ্গে অনিয়মিত পেসার হিসেবে ছিলেন সৌম্য সরকার। এই চারজন মিলেই তিন অঙ্কের আগে গুঁড়িয়ে দেন কিউইদের।

তানজিম শুরুতে দেন জোড়া আঘাত। দ্বিতীয় স্পেলে এসে পর পর তিন উইকেট নিয়ে কিউইদের ভিত নাড়িয়ে দেন শরিফুল ইসলাম। লেইট অর্ডারের প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে তিন শিকার ধরেন সৌম্যও। বাকিদের থেকে খরুচে থাকলেও ইনিংস মুড়ে দেন মোস্তাফিজ।

১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পরিসংখ্যানে সফল হয়ে ম্যাচ সেরা তানজিম, ১৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তারপরে সৌম্য, ২২ রানে ৩ উইকেট পান শরিফুল। মোস্তাফিজ ৩৬ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।

তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে ৯৯ রানের মামুলি লক্ষ্য স্রেফ ৯১ বল খেলে তুলে নেয় বাংলাদেশ। ম্যাচ জিতে সংবাদ সম্মেলনে এসে কোন একজন নয়, সব বোলারকেই বাহবা দিলেন শান্ত,  'আমি নির্দিষ্ট কাউকে কৃতিত্ব দিতে চাই না। প্রত্যেকটা বোলারই দায়িত্ব নিয়ে বল করেছে। আমরা যে পরিকল্পনা দিয়েছিলাম সেই অনুযায়ী বল করেছে।'

উইকেটে পেসারদের রসদ দেখে পেস আক্রমণের উপরই ভরসা রাখেন অধিনায়ক। আভাস পেয়ে শরিফুলদের দ্রুত ফেরান দ্বিতীয় স্পেলে। বোলিং রোটেট করেন সেভাবেই, 'কৌশলগতভাবে বোলিং চেঞ্জ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ সকালে পেস বোলারদের অনেক সাহায্য ছিলো। আমি ওটাই করার চেষ্টা করেছি যে কত লম্বা সময় পেস বোলিং চালু রাখতে পারি।'

'আজ উইকেটের কন্ডিশন ভিন্ন ছিলো। পেস বোলারদের সাহায্য ছিলো, একটু আর্দ্রতাও ছিলো। ওটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। টস জিতে ভালোই হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ছিলো কতক্ষণ এক জায়গায় বল করতে পারে, সেটা করতে পেরেছে দেখা ওদের আমরা অলআউট করেছি।'

তবে এত কিছুর মধ্যেও কিউইরা একশোর আগে গুটিয়ে যাবে এমন ভাবনা আসেনি বাংলাদেশ অধিনায়কের। তারা শুধু আস্থা রাখতে চেয়েছিলেন নিজেদের প্রক্রিয়ার উপর,  'এরকম তো চিন্তা কখনই করিনি (৯৮ রানে ওদের অলআউট করার)। কিন্তু আমরা যে জিনিস এই পুরো সিরিজে করেছি আমাদের প্রক্রিয়া কী। লম্বা সময় যখন ভালো বল করেছি, উইকেট এমনিই পড়েছে। এমন কিছু ছিলো না যে ১০০ বা ৯৮ রানে অলআউট করে দেব। ভালো জায়গায় লম্বা সময় বল করার পরিকল্পনা ছিলো, ওটাই ওরা করেছে। এজন্য খুবই গর্ব বোধ করছি যে ওরা আগের দুই ম্যাচ হারার পর ফিরে আসতে পেরেছে।'

এই জয়ে ইতিহাসে নাম উঠে গেল। ব্ল্যাকক্যাপস ডেরায় গিয়ে কখনই জিততে না পারার গ্লানি আর থাকছে না। তবে একটা ম্যাচ জিতে  উচ্ছ্বাসে ভাসছেন না শান্ত, কারণ সিরিজ যে জেতা হয়নি, 'আমি সিরিজ জিততে এসেছিলাম, এটা মিন করেই বলেছিলাম। আমরা প্রথম ম্যাচ আনলাকি ছিলাম বৃষ্টির কারণে আমাদের বোলিং অপশনগুলো শেষ হয়ে গিয়েছিলো। অবশ্যই খুশি জিততে পেরেছি, সিরিজ জিততে পারলে ভালো লাগত।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

5h ago