আমিরাতকে ২০৬ রানের বড় লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ

ছবি: এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ড

ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম পাঁচ ব্যাটারের সবাই গেলেন দুই অঙ্কে। তাদের মধ্যে বিস্ফোরক ইনিংসে ফিফটি হাঁকালেন তানজিদ হাসান তামিম। তার পাশাপাশি লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিক প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেললেন কার্যকর ইনিংস। এতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে নামা বাংলাদেশ দল।

সোমবার শারজাহতে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাট করেছে টাইগাররা। উদ্বোধনী জুটিতে ভালো সংগ্রহের ভিত পাওয়ার পর নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৫ রান করেছে দলটি।

বাঁহাতি ওপেনার তানজিদ খেলেন ৩৩ বলে ৫৯ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে আসে ৮ চার ও ৩ ছক্কা। ওপেনিংয়ে উঠে আসা অধিনায়ক লিটন ৩ চার ও ১ ছয়ে করেন ৩২ বলে ৪০ রান। একাদশে ফেরা শান্ত ১৯ বলে ২৭ রান করেন ২ চার ও ১ ছক্কায়। হৃদয় আউট হন ৪৫ রানে। ২৪ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৩ চার ও ২ ছক্কা। জাকের ১ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৬ বলে ১৮ রান।

তানজিদের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। মতিউল্লাহ খানের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ তিন বলে টানা বাউন্ডারি মারেন তিনি। ডিপ মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা হাঁকানোর পর আনেন দুটি চার।

সতর্কতার অংশ হিসেবে আগের ম্যাচে বিধ্বংসী সেঞ্চুরি করা পারভেজ হোসেন ইমন একাদশে না থাকায় ওপেনিংয়ে তানজিদের সঙ্গী ছিলেন লিটন। বাংলাদেশের অধিনায়ক তৃতীয় ওভারেই ফিরতে পারতেন সাজঘরে। ধ্রুব পরাশরের বলে ফাইন লেগে তার সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি মুহাম্মদ জাওয়াদউল্লাহ। তিনি বেঁচে যান ব্যক্তিগত ১০ রানে।

পারভেজের শূন্যতা টের পেতে না দেওয়া তানজিদের তাণ্ডব চলতে থাকে। পঞ্চম ওভারে আক্রমণে এসেই তার আগ্রাসনের শিকার হন আগের ম্যাচে আঁটসাঁট বোলিংয়ে ২১ রানে ৪ উইকেট নেওয়া জাওয়াদউল্লাহ। তানজিদ দুই চারের সঙ্গে মারেন এক ছক্কা। মাত্র ২৯ বলে উদ্বোধনী জুটির রান স্পর্শ করে পঞ্চাশ।

পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ফিফটি পেয়ে যান তানজিদ। সেজন্য তার লাগে কেবল ২৫ বল। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি। হায়দার আলীকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে ব্যক্তিগত মাইলফলকে যান তিনি। ৬ ওভারে বাংলাদেশের রান দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৬৬ রান।

ফিফটির পর বেশিদূর এগোতে পারেননি তানজিদ। দশম ওভারের প্রথম বলে তাকে বিদায় করেন এই ম্যাচে আন্তর্জাতিক অভিষেকের স্বাদ পাওয়া সগির খান। শর্ট বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে তিনি ক্যাচ দেন সীমানার কাছে মতিউল্লাহর হাতে। ভাঙে ৫৫ বলে ৯০ রানের জুটি।

পরের ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ একশ পূর্ণ হয় শান্তর শটে। পরাশরের ফুল টসে লং-অন দিয়ে ছক্কা মারেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। তার সঙ্গে লিটনের জুটিতেও রান আসে দ্রুতগতিতে। তবে ত্রয়োদশ ওভারে দ্বিতীয় সাফল্য পায় আরব আমিরাত। জাওয়াদউল্লাহর স্লোয়ার বলে ছক্কা মারার চেষ্টায় সগিরের তালুবন্দি হন লিটন। রান পেলেও ক্রিজে ঠিক স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না তিনি।

লিটনের সঙ্গে ২০ বলে ৩৫ রান যোগ করার পর হৃদয়ের সঙ্গে ২৫ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন শান্ত। শুরুতে মারমুখী মেজাজে থাকলেও পরে তা ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ১৭তম ওভারে ক্যাচ দিয়ে হন জাওয়াদউল্লাহর দ্বিতীয় শিকার।

তানজিদের মতো চারে নামা হৃদয়ও দেখান আগ্রাসন। ১৬তম ওভারে আরব আমিরাতের অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিমকে টানা চার ও ছক্কা মারার পর ১৮তম সগিরকে পরপর দুবার সীমানাছাড়া করেন চার মেরে।

হৃদয় ও জাকেরের পঞ্চম উইকেট জুটিতে রান আসে তরতর করে। তারা যোগ করেন স্রেফ ১৩ বলে ৩৪ রান। ১৯তম ওভার জাওয়াদউল্লাহকে টানা ছক্কা, চার ও ছক্কা মারার পর মিড-অফে ক্যাচ দিয়ে থামেন জাকের। সঙ্গী হারিয়ে হৃদয়ও টেকেননি। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে ছক্কার চেষ্টায় বল আকাশে তুলে সগিরকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি।

প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৯৪ রান তোলা বাংলাদেশ পরের ১০ ওভারে আনে ৪ উইকেট খুইয়ে ১১১ রান। শামিম হোসেন পাটোয়ারি ৫ বলে ৬ ও রিশাদ হোসেন ২ বলে ২ রানে অপরাজিত থাকেন। আরব আমিরাতের হয়ে জাওয়াদউল্লাহ ৪৫ রানে ৩ ও অভিষিক্ত সগির ৩৬ রানে ২ উইকেট নেন।

Comments

The Daily Star  | English

‘Polls delay risks return of autocracy’

Says Khandaker Mosharraf after meeting with Yunus; reiterates demand for election by Dec

13m ago