দক্ষিণ কোরিয়ার 'ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা', পেতে পারেন বাংলাদেশিরাও

দক্ষিণ কোরিয়া সম্প্রতি একটি নতুন ভিসা চালু করেছে যার নাম ‘ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা’। প্রতিকী ছবি: স্টার/ম্যাথু শোয়ার্জ/আনস্প্ল্যাশ
দক্ষিণ কোরিয়া সম্প্রতি একটি নতুন ভিসা চালু করেছে যার নাম ‘ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা’। প্রতিকী ছবি: স্টার/ম্যাথু শোয়ার্জ/আনস্প্ল্যাশ

দক্ষিণ কোরিয়া সম্প্রতি একটি নতুন ভিসা চালু করেছে যার নাম 'ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা'। মূলত বিদেশীদেরকে দক্ষিণ কোরিয়া এসে রিমোট বা দূর থেকে কাজ করতে উৎসাহী করতে এই ভিসার প্রচলন করা হয়েছে।

'ওয়ার্কেশন' ভিসা নামেও পরিচিত এই ভিসাটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। কোনো ব্যক্তি এই ভিসা পেলে তার স্বামী-স্ত্রী বা সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে পারবেন।

রিমোট কর্মজীবীরা এই ভিসার মাধ্যমে ২ বছর পর্যন্ত সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় কাটাতে পারবেন এবং এই সময়সীমা আরো ১ বছর বাড়ানোর সুযোগও রয়েছে।

এই 'যাযাবর' ভিসা পেতে একজন কর্মজীবীকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথমত, বয়স ন্যূনতম ১৮ হতে হবে এবং সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে অন্তত এক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করছেন—এমন কেউ এই ভিসা পাবেন না। শুধু ভিন্ন কোনো দেশে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই এই ভিসা পাবেন; যাতে তারা দক্ষিণ কোরিয়ায় বসে 'রিমোট' ভাবে ঐসব প্রতিষ্ঠানের কাজ করতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক যোগ্যতাও একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত। আবেদনকারীকে ২০২৩ সালে ৮৫ মিলিয়ন ওন বা ৬৬ হাজার মার্কিন ডলার উপার্জন করতে হবে, যা বাংলাদেশি টাকায় মাসে গড়ে ৬ লাখ টাকার কাছাকাছি (বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ বিনিময় মূল্য ১ ডলার = ১১০ টাকা হিসাবে)।

অর্থের এই অঙ্ক দক্ষিণ কোরিয়ার মাথাপিছু গড় জাতীয় আয়ের দ্বিগুণ। আবেদনকারীকে তার দেশে অবস্থিত কোরীয় দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। যারা ইতোমধ্যে অন্য কোনো ভিসায় কোরিয়ায় অবস্থান করছেন, তারা চাইলে ভিসা বদলে ডিজিটাল নোম্যাড ভিসা নিতে পারবেন।

অপর শর্ত হিসেবে কোরিয়ায় থাকাকালে প্রত্যেক আবেদনকারীকে ১০ কোটি ওন সমমূল্যের ব্যক্তিগত মেডিক্যাল বিমা করানো থাকতে হবে।

আবেদনের অংশ হিসেবে বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ভিসা আবেদনপত্র ফর্ম, পাসপোর্ট, পাসপোর্ট কবি, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, কর্মসংস্থানের প্রমাণপত্র, পে স্লিপ ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট। এ ছাড়াও আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণের জন্য আরও ভিন্ন কিছু নথিও জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। সফলভাবে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীদের তাদের নিজ নিজ দেশের কোরীয় দূতাবাসের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথির তালিকা সংগ্রহ করার সুপারিশ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার।

ডিজিটাল নোম্যাড ভিসাধারীরা কোনো কোরীয় সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবে না। বা স্থানীয় ভাবে মুনাফা অর্জন করার কোনো প্রক্রিয়ার সঙ্গেও তারা যুক্ত থাকতে পারবেন না। 

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার এই ভিসার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের সময়য় কোন দেশের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেনি।

ধরে নেওয়া যায়, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের মানুষই এই ভিসা নিয়ে 'ডিজিটাল যাযাবর' হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় বসে কাজ করতে পারবেন।

ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন অনিন্দিতা চৌধুরী

 

Comments

The Daily Star  | English
July uprising and the rise of collective power

July uprising and the rise of collective power

Through this movement, the people of Bangladesh expressed their protest using a language shaped by long-standing discontent.

9h ago