উ. কোরিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু নয়, কিম আমার বন্ধু: ট্রাম্প

উত্তর কোরিয়ায় কিমের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। ফাইল ছবি: হোয়াইট হাউসের ফ্লিকার অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া
উত্তর কোরিয়ায় কিমের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। ফাইল ছবি: হোয়াইট হাউসের ফ্লিকার অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর একের পর এক সংবাদের শিরোনাম হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে 'শত্রু' তকমা পাওয়া উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে নিজের বন্ধুত্ব নিয়ে গর্ব করেছেন ট্রাম্প। বলেছেন, উত্তর কোরিয়া 'পরমাণু শক্তিধর' হলেও শত্রু বা হুমকি নয়।

আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম কোরিয়া হেরাল্ড।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুমকি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, 'আমাদের শত্রুর অভাব নেই। এ মুহূর্তে অনেকের কথাই চিন্তায় আছে। তবে আমি মনে করি উত্তর কোরিয়া এখন আর (যুক্তরাষ্ট্রের) শত্রু নয়। কিমের সঙ্গে আমার খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আমি তাকে পছন্দ করতাম, তিনিও আমাকে পছন্দ করতেন। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো ছিল।'

'তারা (বাইডেন প্রশাসন) ভেবেছিল উত্তর কোরিয়া একটি বড়সড় হুমকি। কিন্তু তিনি (কিম) এখন একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের নেতা। কিন্তু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে', যোগ করেন ট্রাম্প।

শপথ গ্রহণের পর নির্বাহী আদেশে সাক্ষর করার জন্য হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে আসেন ট্রাম্প। এ সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিক্রিয়া

কিমকে ভালো বন্ধু বলে পরিচয় দেন ট্রাম্প। ফাইল ছবি: রয়টার্স
কিমকে ভালো বন্ধু বলে পরিচয় দেন ট্রাম্প। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে 'পরমাণু শক্তি' বলে অভিহিত করায় দক্ষিণ কোরিয়ায় আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে।

দেশটির বিশ্লেষকদের দাবি, এ কথার মাধ্যমে ট্রাম্প পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন যে উত্তর কোরিয়ার কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।

ট্রাম্প মনোনীত প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথও গত সপ্তাহের এক লিখিত বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু শক্তি বলে অভিহিত করেন।

সে সময় হেগসেথের বিবৃতির নিন্দা জানায় সিউলের প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও একীভূতকরণ মন্ত্রণালয়। তিন মন্ত্রণালয় পৃথক পৃথক ভাবে জানায়, উত্তর কোরিয়াকে কখনোই পরমাণু শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যাবে না।

ট্রাম্পের বক্তব্যের পর সিউল আবারও একই কথা বলেছে।

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের সূত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিওন হা-কোইউ বলেন, 'উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ শুধু কোরীয় উপদ্বীপ নয়, গোটা বিশ্বে টেকসই শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার আবশ্যক শর্ত। আমাদের সরকার এই লক্ষ্য পূরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবে।'

পরমাণূ শক্তি মানেই পরমাণু অস্ত্রের মালিক নয়

কিমকে ভালো বন্ধু বলে পরিচয় দেন ট্রাম্প। ফাইল ছবি: এএফপি
কিমকে ভালো বন্ধু বলে পরিচয় দেন ট্রাম্প। ফাইল ছবি: এএফপি

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো রাষ্ট্র 'পরমাণু শক্তি' হলেই তার কাছে 'পরমাণু অস্ত্র' আছে, বিষয়টি এমন নয়।

১৯৬৮ সালে সাক্ষরিত পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তি মতে, বিশ্বে পাঁচটি স্বীকৃত পরমাণু-অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশ এ ধরনের অস্ত্র তৈরি বা সংরক্ষণ করতে পারবে না।

মূলত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের  পাঁচ স্থায়ী সদস্য এই সুবিধা পেয়ে আসছে।

এই চুক্তিতে ১৮৯টি দেশ সাক্ষর করলেও সাক্ষর করেনি ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল ও দক্ষিণ সুদানের মতো দেশ।

নির্বাচনী প্রচারণার সময়য় ট্রাম্প বেশ কয়েকবার কিমের সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, কিম ক্ষতির কারণ হবেন না। এমন কী, উত্তর কোরিয়ার কাছে পরমাণু অস্ত্র থাকায় বিশ্ব আরও নিরাপদে আছে—এমন দাবিও করেন তিনি।

ট্রাম্পই এখন পর্যন্ত মার্কিন ইতিহাসে একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি উত্তর কোরিয়ার কোনো নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন। কিমের সঙ্গে তিনি তিনটি সম্মেলনে দেখা করেন।

২০১৯ সালের জুনে প্রথম ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়া সফর করেন ট্রাম্প।

Comments

The Daily Star  | English

Putin questions US-backed Ukraine ceasefire plan

The Russian president said he agreed in principle with US proposals to halt the fighting but said he wanted to address the “root causes of the conflict”

40m ago