চাল মজুতকারীদের শাস্তির আওতায় আনুন

ছবি: সংগৃহীত

চাল, ডাল, আটাসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের চলমান উদ্যোগ দেখে আমরা শঙ্কিত। মনে হচ্ছে, বাজারব্যবস্থা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং কোনো ধরনের অনুনয়-বিনয় বা সতর্কবাণী এটাকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যথেষ্ট নয়।

ক্রমাগত চালের দাম বৃদ্ধি, এমনকি বোরো মৌসুমের মাঝামাঝি সময়েও—এ ধরনের ঘটনা খুব উদ্বেগের; আন্তর্জাতিক বাজারে বিপর্যয় অথবা অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুতদারদের কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকটের কারণে দাম বৃদ্ধি প্রচলিত যুক্তিরও বিরোধী।

সম্প্রতিকালে সরকারি অভিযানগুলোয় দেখা গেছে, নিয়ন্ত্রণের অভাবে অবাধে মজুতদারি বেড়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মজুতদারদের মধ্যে ছোট-বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী থেকে শুরু করে ইটভাটার মালিক এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও আছেন—সবাই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন। এর ফলে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও গত ২ সপ্তাহে চালের দাম কেজিতে ৮ টাকা থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, মাত্র এক সপ্তাহে মোটা ও চিকন চালের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।

গত বুধবার খাদ্যমন্ত্রী দেশের ৬টি বড় শিল্প গোষ্ঠী—স্কয়ার, প্রাণ, সিটি, আকিজ, বসুন্ধরা ও এসিআই'র নাম উল্লেখ করেছেন—যারা প্রধানত মজুতদারি ও মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী। এ অভিযোগ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অস্বীকার করেছে।

তিনি বলেছেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন জেলা থেকে ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে চাল কিনে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি করে। তিনি আরও বলেছেন, 'সিন্ডিকেটকে' শাস্তি দিতে ও বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার প্যাকেটজাত চাল বিক্রি সীমিত করার এবং প্রয়োজনে চাল আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনা করছে।

এর ফলে দাম কি কমবে? সত্যি কথা বলতে, এই মুহূর্তে, সাধারণ নাগরিকরা আর এসব সরকারি পরিকল্পনার কথা শুনতে পছন্দ করেন না, সেটা যাই হোক না কেন। আমরা এ বিষয়ে দ্রুত সমাধানমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।

২০২২-২৩ অর্থবছরে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রতি বছর বাজেটে কৃষি খাতের উন্নয়নে বিশেষ নজর দেওয়া হয় এবং এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে একইসঙ্গে প্রধান খাদ্যশস্য আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা (বর্তমান পরিস্থিতিতে যদিও ন্যায়সঙ্গত) আন্তর্জাতিক বাজারের অব্যাহত অস্থিরতার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী সংকট তৈরি করতে পারে।

এ কারণে আসন্ন বাজেটে অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনের সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত, যাতে আন্তর্জাতিক মূল্যের প্রভাবে নিজেদের ভারসাম্য সহজে নষ্ট না হয়। সরকারের উচিত জরুরিভিত্তিতে মজুতদারির মানসিকতা বন্ধ করা এবং জড়িতদের শাস্তি দেওয়া।

Comments

The Daily Star  | English

One killed in crude bomb blast during clash at Mohammadpur Geneva Camp

Several crude bombs exploded during the clash around 3:30am, police say

1h ago