২৭ হাজার কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে ১০ ব্যাংক

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

চলতি বছরের মার্চ মাসের হিসাব অনুসারে, দেশের ১০টি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে ২৭ হাজার ৫১ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে।

ব্যাংকগুলো হলো- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক।

এক বিশেষজ্ঞের অভিমত, ব্যাংকগুলোর অনিয়মই মূলত এত বড় আকারের মূলধন ঘাটতির জন্য দায়ী।

মূলধন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সর্বোচ্চ ঘাটতি ছিল ১২ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।

একই সময়সীমার মধ্যে রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৭৬২ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকায় পৌঁছায়।

এ অবস্থায় একজন বিশ্লেষক এই সমস্যা সমাধানের জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, এই ধরনের পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের কাছে এমন একটি বার্তা দেয় যে, দেশের ব্যাংকিং খাত দুর্বল হয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভাষ্য, বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সাধারণত বিদেশি ব্যবসায়ীরা ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তির বিষয়টি বিবেচনায় রাখে।

তিনি বলেন, 'সুতরাং মূলধন ঘাটতির এমন অবস্থা বিদেশিদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে।'

মার্চে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় তা এই খাতের মূলধন ভিত্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

বাংলাদেশে পরিচালিত ৬০টি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে এ বছর ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) রাখতে হয়, যা শেষ পর্যন্ত তাদের মূলধন ভিত্তিতে প্রভাব ফেলে।

মূলধন হ্রাসের কারণে ব্যাংকগুলোর মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (সিএআর) মার্চ মাসে ১১ দশমিক ৪১ শতাংশে নেমে আসে। এক বছর আগে যা ছিল ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

আমানতকারীদের সুরক্ষা, ব্যাংকের স্থিতিশীলতা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা পরিমাপের মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হয় মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাতকে (সিএআর)। যে ব্যাংকের মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত বা সিএআর যত বেশি, অর্থনৈতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সে ব্যাংকের সক্ষমতা ততটাই শক্তিশালী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলছেন, মূলধনের ঘাটতি রয়েছে এমন কোনো ব্যাংক অন্য দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সরাসরি ঋণপত্র (এলসি) খুলতে অসুবিধার মুখে পড়ে।

স্থানীয় ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তিকে শক্তিশালী করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার পরামর্শ দেন সাবেক এই গভর্নর।

তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত ব্যাংকগুলোর কর্মীদের প্রণোদনা বোনাস দেওয়া বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt looking to defuse trade tensions with India

Bangladesh does not want any further escalation in tension with India, as the recent retaliatory moves are affecting bilateral trade and both countries’ businesses.

7h ago