বছরে ১৪৭ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, দুর্দশায় কুয়াকাটার জেলেরা

ছবি: স্টার

মাছের বংশবিস্তারে সহায়তার জন্য আগামী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বছরে ১৪৭ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে আয় কমে যাওয়ায় দুর্দশায় পড়তে হয় জেলেদের।  

সম্প্রতিকালে মৎস্যসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের বংশবৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। 

তবে, দীর্ঘ এ সময়ে নিষেধাজ্ঞার কারণে কুয়াকাটায় সমুদ্রগামী জেলেদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। 

স্থানীয় জেলেরা জানান, বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে বিভিন্ন ধাপে তাদের ১৪৭ দিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হচ্ছে। অক্টোবরে মা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ-এপ্রিল মাসে ইলিশের অভয়াশ্রমে ৬০ দিনের নিষেধাজ্ঞা এবং সবশেষ ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা। এই ১৪৭ দিন ছাড়াও ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরায় ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। করোনাকালে তাদের রোজগার কম হওয়ায় তারা ঋণ আর ধারদেনায় জর্জরিত। 

কলাপাড়া উপজেলার আলীপুর, মহিপুর, লালুয়া, কুয়াকাটা ধুলাসার, ধানখানখালী, বাবলাতলার ঢোস, নিজামপুর, গঙ্গামতি জেলেপল্লী ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দুর্দশার কথা জানা গেছে।  

গঙ্গামতি গ্রামের জেলে আলী হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাগরে আগের মতো মাছ মেলে না। তার ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞায় আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দিশেহারা।' 

চারিপাড়া গ্রামের জেলে মাসুদ বলেন, 'এই এলাকার ৯০ শতাংশ মানুষ মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এখন ৩ বেলা খাবার যোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে। সাগরে ইলিশ শিকার বন্ধ। আমাদের আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে।' 

মহিপুর মৎস্য বন্দরের আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি ফজলু গাজী বলেন, 'আমরা শুরু থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার দাবি করে আসছি। গরিব জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে না পারলে খাবেন কী। অনেকে জেল-জরিমানার ভয় উপেক্ষা করে মাছ ধরতে নামেন।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Atif Aslam, December, and erasure of historical consciousness

Culture reveals what a society chooses to remember, and what it finds acceptable to forget

19m ago