মৌলভীবাজারে কাটা হচ্ছে সামাজিক বনায়নের গাছ

কেটে ফেলা গাছের স্তূপ পড়ে আছে হাজীপুর করাতকলের পাশে। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির প্রায় ৫০টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় উপকারভোগীদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে এসব গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে।

রেঞ্জ কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো ও থানায় মামলার পরও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ কারণে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির উপকারভোগীরা গত ২২ জুন বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আরেকটি অভিযোগ করেছেন।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে ও স্থানীয় উপকারভোগীদের মাধ্যমে জানা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে দারিদ্র বিমোচন সমিতির অধীনে হাজীপুর ইউনিয়নে মনু তিলকপুর রাস্তা থেকে মজমপুর (সিকিরজান পুল) এবং হাজীপুর রাস্তা থেকে সোনা দিঘিরপাড় পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তায় আকাশমনি ও বেলজিয়াম প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়।

স্থানীয় উপকারভোগীদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে এসব গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও উপকারভোগী নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৬ জুন সামছুল হক সামাদের নেতৃত্বে উপকারভোগী হাসানুল বারী সানি, আবরার উজ্জামান, আবুল হোসেন, মকদ্দছ আলী, ছালিক বক্স ও আব্দুল মোহিত কাউকে না জানিয়ে সামাজিক বনায়নের বড় এবং ভালো মানের ৫০টির মতো গাছ কেটে ফেলেন।'

কেটে ফেলা গাছের কিছু স্তূপ হাজীপুর করাতকলের পাশে, হাজীপুর বাজার এবং পাইকপাড়া বাজারে পড়ে থাকলেও, বেশিরভাগ কাঠ অন্যত্র বিক্রি করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

উপকারভোগী আরেক ইউপি সদস্য সায়েস্তা মিয়া বলেন, 'প্রাণের ভয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারছেন না। অভিযুক্তরা স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার আশীর্বাদে এলাকায় এতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যে, তারা কাউকে তোয়াক্কা করছেন না।'

উপকারভোগী তালুকদার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার পর গত ১১ জুন সামাজিক বনায়নের গাছ কাটার অভিযোগে কুলাউড়া থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ইউপি সদস্য এবং উপকারভোগী নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।'

পরে গত ২২ জুন বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আরেকটি অভিযোগ করা হয় বলে তিনি জানান।

এদিকে, বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাটা গাছের স্তূপ জব্দ করে রেখেছেন। তবে জব্দকৃত গাছ রাস্তার পাশে থাকায় যে কোনো সময় অভিযুক্তরা পাচার করতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন উপকারভোগীরা।

হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওদুদ বক্স দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যে গাছগুলো কাটা হয়েছে তা শুকনো হাতে গোনা দুয়েকটি। আর সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতাভুক্ত সবাই এই বিষয়টি জানেন।'

তবে এখানে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেও জানান তিনি।

অভিযুক্ত সামছুল হক সামাদ ডেইলি স্টারকে জানান, তিনিও গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত নন।

বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন ডেইলি স্টারকে জানান, তারা সরেজমিন গিয়ে ৩২টি গাছ কাটার সত্যতা পেয়েছেন। যেহেতু সামাজিক বনায়নের গাছ, সেহেতু স্থানীয় উপকারভোগীদেরই আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে তাদের করার কিছুই নেই। 

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।'

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

3h ago