৬৬ মিলিয়ন বছরের পুরনো ডাইনোসরের ভ্রূণ পাওয়া গেল চীনে

শিল্পীর আঁকা ডাইনোসরের ভ্রূণ। ছবি: টুইটার

স্টিভেন স্পিলবার্গের 'জুরাসিক পার্ক'র কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। তেমন কিছু একটা বাস্তবে ঘটে যায় যদি! কেননা, গবেষকদের হাতে এসেছে ডাইনোসরের নতুন এক জীবাশ্ম। যা আগে কখনোই দেখা যায়নি।

প্রাগৈতিহাসিক বিলুপ্ত প্রাণীটিকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। তাই বিজ্ঞানীরাও নিমগ্ন গবেষণায়। সম্প্রতি চীনের বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন নিখুঁতভাবে সংরক্ষিত একটি ডাইনোসরের ভ্রূণ।

এটি পাওয়ার পর তারা জানিয়েছেন, মুরগির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে ভ্রূণটি যেমন থাকে তেমনি অক্ষত আছে ডাইনোসরের এই ভ্রূণটি।

আজ বুধবার বিবিসি জানায়, ডাইনোসরের যে ভ্রূণটি দক্ষিণ চীনের গাঞ্জোতে আবিষ্কৃত হয়েছে, তা কমপক্ষে ৬৬ মিলিয়ন বছরের পুরনো বলে মনে করছেন গবেষকরা।

ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি দাঁতহীন থেরোপড ডাইনোসর বা ওভিরাপ্টোরোসর। এর নামকরণ করা হয়েছে 'বেবি ইংলিয়াং।'

গবেষক ড. ফিওন ওয়াইসুম মা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, 'এটি ইতিহাসে পাওয়া সেরা ডাইনোসর ভ্রূণ।'

ছবি: টুইটার

আবিষ্কারটি গবেষকদের ডাইনোসর ও আধুনিক পাখির মধ্যে যোগসূত্র সম্পর্কে আরও বেশি বোঝার সুযোগ করে দিয়েছে। জীবাশ্মটি কুণ্ডলী পাকানো অবস্থায় ছিল। যেমনটি দেখা যায় পাখির ডিম ফোটার খানিক আগে।

ড. ফিওন বলেন, 'এটি ইঙ্গিত দেয় যে, আধুনিক পাখিদের মধ্যে এ ধরনের আচরণ প্রথম তাদের ডাইনোসর পূর্বপুরুষদের মধ্যে বিকশিত এবং উদ্ভূত হয়েছিল।'

ওভিরাপ্টোরোসরস, যার অর্থ 'ডিম চোর টিকটিকি' ছিল পালকযুক্ত ডাইনোসর, যারা ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষের দিকে, অর্থাৎ ১০০ মিলিয়ন থেকে ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে বর্তমান এশিয়া ও উত্তর আমেরিকায় বাস করতো।

গবেষক দলের সদস্য জীবাশ্মবিদ অধ্যাপক স্টিভ ব্রুসেট টুইটে বলেছেন, 'এটি আমার দেখা সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ডাইনোসরের জীবাশ্মগুলোর একটি, যা ডিম ফুটে বেরিয়ে আসার দ্বারপ্রান্তে ছিল।'

'বেবি ইংলিয়াং' মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত ১০ দশমিক ৬ ইঞ্চি লম্বা এবং ভ্রূণটি চীনের ইংলিয়াং স্টোন নেচার হিস্ট্রি মিউজিয়ামে ৬ দশমিক ৭ ইঞ্চি লম্বা ডিমের ভেতর রয়েছে।

২০০০ সালে ডিমটি প্রথম উন্মোচিত হয়, তবে পরবর্তী ১০ বছর সেটিকে সংরক্ষণে রাখা হয়েছিল।

জাদুঘরে নির্মাণ কাজ শুরু ও পুরানো জীবাশ্মগুলোকে সাজানোর সময় ওই ডিমের দিকে গবেষকদের নজর পড়ে এবং তারা ধারণা করছিলেন যে, এর ভেতর ভ্রূণ আছে।

ভ্রূণটির শরীরের কিছু অংশ এখনো পাথরে ঢাকা। এর সম্পূর্ণ কঙ্কালের চিত্র তৈরি করতে গবেষকরা উন্নত স্ক্যানিং কৌশল ব্যবহার করবেন বলে জানা গেছে।

Comments