ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, পুলিশের গুলিতে শিশু নিহতের অভিযোগ

ঠাকুরগাঁও
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় এক বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে।

নিহত আশা উপজেলার মিরডাঙ্গী গ্রামের মো. বাদশার মেয়ে।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে শিশুটির মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারেননি ইউএনও।

এদিকে পুলিশের গুলিতে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে দাবি করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ প্রতিবেদন তৈরি পর্যন্ত কয়েকশ গ্রামবাসী রানীশংকৈল থানার সামনে বিক্ষোভ করছিল।

বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে ডেইলি স্টার জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবং রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে।

কিন্তু রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বারবার চেষ্টা করেও তাদের কারও সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

যোগাযোগ করা হলে রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ও অপস) মো. ওয়ালিদ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাস্থলে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মাথায় আঘাত ছিল। বিক্ষুব্ধ জনতা সেখানে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছিল, পুলিশও ফাঁকা গুলি ছুড়ছিল। শিশুটি মাথায় কীভাবে আঘাত পেয়ে মারা গেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।'

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে ইউএনও সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবীর বলেন, 'আজ রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর, নন্দুয়ার ও হোসেনগাঁও ইউনিয়নে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। বাচোর ইউনিয়ন পরিষদে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিকেলে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময় এই ওয়ার্ডের ভি এস জুনিয়র হাইস্কুল ভোটকেন্দ্রে উত্তেজনা তৈরি হয়।'

পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা ফলাফলে কারচুপি হয়েছে দাবি করে নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বলে জানান ইউএনও।

এ অবস্থায় নির্বাচন কর্মকর্তারা নির্বাচনের ফলাফলের শিট ও নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করতে সক্ষম হন। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টার দিকে উত্তেজিত জনতা ওই এলাকায় অবস্থান করা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

ইউএনও জানান, পুলিশ তখন ২ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

'পরে জানতে পেরেছি যে সহিংসতার সময় এক শিশু মারা গেছে,' বলেন তিনি।

'তবে শিশুটি কীভাবে মারা গেছে, তা আমি জানি না। শিশুটি গুলিবিদ্ধ হয়েছে কি না, তা আমি নিশ্চিত নই। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে,' যোগ করেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. খতিবর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফলাফল ঘোষণার পর ভোটকেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ কিছু লোক নির্বাচন কর্মকর্তাদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।'

'আমরা তাদের পরিচয় জানতে পারিনি। আমরা ইউএনও কার্যালয়ের নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ কক্ষে গিয়ে নির্বাচনের ফলাফল জমা দেই। পরে জানতে পারি যে সেখানে সহিংসতা হয়েছে,' বলেন তিনি।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী বাবুল হোসেন ৪৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। অপর ৩ প্রতিদ্বন্দ্বী আজাদ আলী পেয়েছেন ৪৪২ ভোট, খালেদুর রহমান পেয়েছেন ২৪৫ ভোট ও কামালউদ্দিন পেয়েছেন ২১৩ ভোট।

তবে বিক্ষুব্ধরা কার সমর্থক ইউএনও বা প্রিজাইডিং অফিসার কেউই তা জানতে পারেননি।

Comments

The Daily Star  | English

NBR activities disrupted as officials continue work abstention

This marks the ninth day of protests since the interim government issued the ordinance on May 12

2h ago