নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সরকারি ইজারায় কলেজ মাঠে পশুর হাট

শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে পশুর হাট। ছবি: স্টার

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে পশুর হাট বসাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে সরকারি ইজারায় পশুর হাট বসানো হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ওই হাটে দিনভর সব ধরনের পশু কেনা-বেচা চলেছে। আজ শুক্রবারও বসেছে হাট। ঈদুল আজহার আগের দিন শনিবার পর্যন্ত সেখানে হাট বসবে।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবু জামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে পশুর হাট বসানো হয়েছে।'

ইজারাদার বলছেন, কলেজ মাঠে হাট বসানোর জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তবে এ সংক্রান্ত লিখিত কোনো নির্দেশনা দেয়নি প্রশাসন।

স্থানীয়রা বলছেন, এই মাঠে হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছেন কলেজের গভর্নিং বডির প্রধান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা। অনুমতি ছাড়াও শিডিউল বিক্রি এবং ইজারাদার নির্ধারণের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি এই হাট ২৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। আখাউড়া পৌর এলাকার নারায়ণপুরের বাসিন্দা ইয়াছিন মোল্লা হাট ইজারা নিয়েছেন।

শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে পশুর হাট। ছবি: স্টার

স্থানীয়রা জানান, ঈদের কারণে কলেজটি বন্ধ থাকায় শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের লোকেরা এ মাঠে খেলাধুলা করে। এখন এই মাঠে পশুর হাট দেওয়ার কারণে খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পশুর বর্জ্যে পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়াও দুর্গন্ধে মাঠের পাশের রাস্তা দিয়ে লোকজনদের চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আখাউড়া থানা ভবনের পূর্ব পাশেই অবস্থিত শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ। কলেজের বিশালকার মাঠের একেবারে উত্তর ও পূর্ব পাশে বহুতল তিনটি অ্যাকাডেমিক ভবন। সেখানে মাঠ খুঁড়ে, বাঁশ পুঁতে ও ত্রিপল টানিয়ে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়াসহ বিভিন্ন পশু রাখা হচ্ছে। পশুর বর্জ্যে ও খোঁড়াখুঁড়িতে মাঠটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হাটের ইজারাদার ইয়াছিন মোল্লা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পশুর হাট বসানোর নির্ধারিত স্থানে পানি উঠে যাওয়ায় আমরা কলেজের মাঠে হাট বসাতে ইউএনও বরাবর আবেদন করেছি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদেরকে হাট বসানোর মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে হাটের কারণে কলেজ মাঠ যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা মেরামত ও পরিষ্কার করে দিতে আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। আমরা এই নির্দেশ পালন করব।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পশুর হাটের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে জানানোর পর তিনি কোনো আপত্তি না করায় আমি বাধা দেইনি। তবে ইজারাদারকে বলেছি যে, আমি চাই না এটা আপনারা করেন, এটা শোভনীয় নয়। কলেজ মাঠের পরিচ্ছন্নতা যেন বজায় থাকে, সেটাও তাদেরকে বলা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Dhaka city urban development problems

Dhaka on a perilous path: Lax rules, weak oversight fuel unplanned expansion

Near-unregulated vertical expansion put immense pressure on utilities and infrastructure, worsened traffic congestion, compromised fire safety

15h ago