শেষ সম্বলটুকু রক্ষায় মোস্তফার একার লড়াই

ধরলা-তীরের ভাঙন ঠেকাতে মোস্তফা আলীর একক প্রচেষ্টা। ছবি: স্টার

দিনমজুর মোস্তফা আলী (৪৮) লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ব্যাপারীটারী ঘাটেরপাড় এলাকার বাসিন্দা। বেশ আগেই তার কয়েক বিঘা আবাদি জমি ধরলার উদরে চলে গেছে। এখন অবশিষ্ট ৬ শতাংশ জমিও পড়েছে ভাঙনের হুমকিতে।

এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নদী থেকে বালু তুলে তা বস্তায় ভরে আবার নদীতে ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সবহারা এই মানুষটি।

মোস্তফার সংসারে আছেন তার স্ত্রী ও ৩ সন্তান। গত ১ সপ্তাহ ধরে বালুভর্তি বস্তা ফেলে বসতভিটা সংলগ্ন ধরলার তীর সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন তারা। এতে মোস্তফা আলীর খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকার মতো।

মোস্তফা বলেন, 'এই ৬ শতাংশ জমি ছাড়া আমার আর কোনো সম্পদ নেই। এই জমিটুকুও যদি নদীগর্ভে চলে যায় তাহলে বাস করার জায়গাটুকুও থাকবে না। নগদ টাকা দিয়ে অন্য কোথাও জমি কেনার সামর্থ্যও আমার নেই।'

পরিবারের শেষ আশ্রয়টুকু রক্ষার লড়াইয়ে মোস্তফার সঙ্গী হয়েছেন তার স্ত্রী জোছনা বেগম (৪৩)। তিনি বলেন, 'জায়গাটুকু রক্ষায় আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। এই কাজে আমরা সরকারি কিংবা বেসরকারি-ে কোনো ধরনের সহযোগিতাই পাইনি।'

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সোহরাব হোসেনের ধারণা, মোস্তফা ও তার পরিবারের সদস্য সেভাবে উদ্যোগী হয়েছেন, তাতে হয়তো এই দফায় তার জায়গাটুকু রক্ষা করা যাবে। তবে ধরলার তীররক্ষার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

ইউপি সদস্য জোনাব আলীর ভাষ্য, নদী ভাঙন রোধে ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব কোনো তহবিল নেই। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন।

জোনাব আলী বলেন, 'বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) অবহিত করা হয়েছে। পাউবো জানিয়েছে ভাঙন রোধে এখানে একটি আলাদা প্রকল্প নেওয়া হবে।'

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্যাপারীটারী এলাকায় কিছু অংশে ধরলা নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ চলমান আছে। পর্যায়ক্রমে তা অন্য এলাকাগুলোতে সম্প্রসারণ করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
govt employees punishment rule

Govt employees can now be punished for infractions within 14 working days

Law ministry issues ordinance amending the Public Service Act, 2018

4h ago