স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযান ইতিবাচক, তবে যথেষ্ট নয়: টিআইবি

বেসরকারি চিকিৎসাসেবার মান নিয়ন্ত্রণে নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠনের আহ্বান
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

সারাদেশে অবৈধ বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চলমান অভিযান ইতিবাচক তবে যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগ-নির্ণয় কেন্দ্রগুলোর মান নিয়ন্ত্রণে নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠনের আহ্বান জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বেড়াজাল ছিন্ন করে খাতটির সার্বিক সুশাসন নিশ্চিতে চলমান অভিযান যথেষ্ট নয়। বরং দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'অভিযান শুরুর মাত্র একদিনের মাথায় বিপুল সংখ্যক নতুন লাইসেন্স ও নবায়নের আবেদন জমা পড়ায় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে যে যথাযথ তদারকির প্রকটতর অভাব ছিল, তা প্রমাণিত। এমন অবস্থায় চলমান অভিযান বেহাল ও অরাজকতাপূর্ণ খাতটিতে সুশাসন নিশ্চিতে কতোটা কার্যকর হবে সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। দীর্ঘমেয়াদে সুফল পেতে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির জন্য খসড়া আইন চূড়ান্ত করে দ্রুততার সাথে আইন হিসেবে প্রণয়ন করতে হবে ও তার কার্যকর বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসাথে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের মান পরিবীক্ষণ এবং সুশাসন নিশ্চিতে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠন জরুরি।

নিয়মিতভাবে এ জাতীয় অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি জমাকৃত আবেদনসমূহ যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই ও আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স দেওয়া ও নবায়ন করা হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করছে টিআইবি। এক্ষেত্রে যে-কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব, ভয়-ভীতি ও করুণার ঊর্ধ্বে থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যাতে নির্মোহভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, তা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

কোভিডকালীন রিজেন্ট হাসপাতাল কাণ্ডের উদহারণ দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, 'বিনা লাইসেন্স ও মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সসহ স্বাস্থ্যসেবার নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করে যেসব প্রতিষ্ঠান এতোদিন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, সেইসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির সম্মুখীন করতে হবে। একইসাথে নিয়ম-বিরুদ্ধ এসব কর্মকাণ্ডকে এতোদিন যারা বিভিন্নভাবে সুরক্ষা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন তাদেরকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় সর্ষের ভেতরে থাকা ভূত তাড়ানো সম্ভব হবে না।'

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টিআইবি 'বেসরকারি চিকিৎসাসেবা : সুসাশনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শিরোনামে ২০১৮ সালের ০৭ ফেব্রুয়ারি একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে (https://www.ti-bangladesh.org/beta3/images/2018/report/private_health/full_report_Private_Health_060218.pdf)। যেখানে একদিকে বাণিজ্যিকীকরণের প্রবণতা, মুনাফাকেন্দ্রিক সেবা ব্যবস্থা, ও অন্যদিকে সরকারের মনোযোগ, পরিদর্শন ও তদারকির ঘাটতির কারণে সাধারণ সেবাগ্রহীতারা যে জিম্মি হয়ে পড়েছেন, তা বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। স্বাস্থ্য সেবার মতো একটি মৌলিক বিষয়, যেখানে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত সেখানে মুনাফা-বিভোর ও অমানবিকভাবে দুর্নীতি পরায়নদের হাতে জিম্মিদশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার অপরিহার্য দায়িত্ব বলে মনে করে টিআইবি।

Comments

The Daily Star  | English

NEIR launch deferred to January 1

NEIR was scheduled to be implemented on December 16 this year

48m ago