২১০০ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক সংস্কার প্রয়োজন

চলতি বছর এপ্রিলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ। স্টার ফাইল ফটো

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর দেশের সড়ক-মহাসড়কের সংস্কারকাজ অব্যাহত রাখলেও, প্রায় ২ হাজার ১০০ কিলোমিটার রাস্তা এখনো 'খারাপ, বেশি খারাপ বা অতি খারাপ' অবস্থায় আছে।

সওজের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে তা জরিপকৃত রাস্তার ১০ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলীরা বলছেন, ওভারলোডিং, সময়মতো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাজেট বরাদ্দের অভাব এবং দুর্বল নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার এই অবস্থার প্রধান কারণ।

মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন নিডস রিপোর্ট ২০২২-২৩ অনুযায়ী, সড়ক, সেতু ও কালভার্ট মেরামতের জন্য আগামী অর্থবছরে প্রায় ৬ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে।

তবে, সওজ বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা প্রয়োজনের মাত্র অর্ধেক।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ২২ হাজার ৪২৮ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং জেলা সড়ক আছে।

প্রতি বছর সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করতে কত টাকা প্রয়োজন হতে পারে তা জানতে সওজের হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স সার্কেল এই জরিপ করে।

পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় কোন রাস্তাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অগ্রাধিকার দিতে হবে সেই তথ্যও উঠে আসে এ জরিপে।

২০২১ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এ জরিপ কাজ পরিচালনা করা হয়।

গত মঙ্গলবার সওজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রক্ষণাবেক্ষণ বা পুনর্নির্মাণের অধীনে থাকা রাস্তাগুলো বাদ দিয়ে এ বছর ২০ হাজার ৭২ কিলোমিটার (৮৯ দশমিক ৫০ শতাংশ) রাস্তার জরিপ করা হয়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, এক হাজার ১২৮ কিলোমিটার (৫ দশমিক ৬২ শতাংশ) রাস্তার খারাপ অবস্থা, ৪৯৩ কিলোমিটার (২ দশমিক ৪৬ শতাংশ) বেশি খারাপ অবস্থায় এবং ৪৫৭ কিলোমিটার (২ দশমিক ২৮ শতাংশ) অতি খারাপ অবস্থায় রয়েছে।

বাকি ৮৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ রাস্তা 'ভালো' অবস্থায় পাওয়া গেছে।

রাস্তার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে রাস্তাগুলোকে ৫টি ভাগে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে বলে জানান একজন সওজ প্রকৌশলী।

তিনি জানান, যদি কোনো রাস্তা 'অতি খারাপ' হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, তাহলে সেখানে তাত্ক্ষণিক কাজ শুরু করা প্রয়োজন। যদিও একটি 'বেশি খারাপ' রাস্তার কাজও শুরু করা দরকার, অন্যথায় সেটি পরের বছর 'অতি খারাপ' হয়ে যাবে।

তিনি আরও জানান, কেউ যদি 'খারাপ' রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন তাহলে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে তুলনামূলকভাবে বেশি সময় লাগবে এবং যাত্রা স্বাচ্ছন্দ্যের হবে না।

গত বছর প্রকাশিত জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রায় ৩ হাজার ৫ দশমিক ৭২ কিলোমিটার (১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ) রাস্তা 'খারাপ, বেশি খারাপ বা অতি খারাপ' অবস্থায় ছিল।

কারণ

পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বলেন, সওজ বছরে একবার এ জরিপ চালায়। 'কিন্তু এ ধরনের জরিপ বছরে ৩-৪ বার করা উচিত এবং সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অবিলম্বে রাস্তাগুলো মেরামত করা উচিত।'

তিনি আরও বলেন, 'খারাপ রাস্তা চিহ্নিত করতে দেরি হলে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ আরও বেড়ে যায়।'

যানবাহনের ওভারলোডিংকে রাস্তার ক্ষতির একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'কর্তৃপক্ষের উচিত সংশ্লিষ্ট আইনগুলো কঠোরভাবে কার্যকর করা।'

সওজের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান জানান, চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ২-৩ বছরের মধ্যে শেষ হলে ৯৮ শতাংশ সড়কের অবস্থা ভালো করা সম্ভব হবে।

Comments

The Daily Star  | English
July uprising and the rise of collective power

July uprising and the rise of collective power

Through this movement, the people of Bangladesh expressed their protest using a language shaped by long-standing discontent.

8h ago