রাশিয়ার ‘গোয়েন্দা তৎপরতায়’ উদ্বিগ্ন অস্ট্রেলিয়া

ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকার আশঙ্কা করছে যে, কূটনীতির অন্তরালে দেশটিতে রাশিয়া গোয়েন্দা কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই গুপ্তচরবৃত্তির উদ্বেগের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় রুশদের উপস্থিতির দিকে সরকার 'কঠোরভাবে' নজর রাখছে।

এছাড়া ফেডারেল সরকার অস্ট্রেলিয়ায় রুশ কুটনীতিকদের 'প্রোফাইল' সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ভিসাগুলো সাবধানতার সঙ্গে যাচাই করছে।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংয়ের একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় ক্রেমলিন সমর্থিত গোয়েন্দা কার্যক্রম সম্পর্কে উদ্বেগের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় রাশিয়ার উপস্থিতি 'প্রবলভাবে' দেখা হচ্ছে।

তিনি জানান, এ ব্যাপারে সরকারের করণীয় সম্পর্কে বিরোধী দলকে অবহিত করা হয়েছে। যেসব কূটনীতিকের কার্যকলাপ কূটনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় তাদের ভিসার মেয়াদ নাও বাড়ানো হতে পারে এবং তাদের দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হতে পারে।

তবে এখন পর্যন্ত রাশিয়ান দূতাবাসের কোনো কর্মীকে অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় দূতাবাস। রাশিয়ান দূতাবাসের একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে কূটনীতিক মিশনের কর্মীদের পোস্টিংয়ের বিশদ বিবরণ সাধারণত মিডিয়ার কাছে প্রকাশ করা হয় না।'

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংয়ের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'আমাদের পছন্দ কূটনৈতিক চ্যানেল বজায় রাখা। কূটনৈতিক প্রোফাইলগুলো সবসময় আমাদের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'কিছু সময়ের জন্য, কিছু রাশিয়ানের কার্যকলাপ আমাদের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে ছিল না।'

এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাশিয়ার কূটনীতিকদের প্রতি গভীর নজর রাখছে অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যারা রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের মূল সমর্থক তাদের দিকেও কঠোর নজর রাখার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছে সংস্থাগুলো।

অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এবিসি নিউজকে বলা হয়েছে, রুশদের ভিসা আবেদনগুলো নিবিড়ভাবে যাচাই করা হচ্ছে এবং সন্দেহ হলে আবেদনগুলো প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে।

বর্তমানে মস্কোতে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক প্রমাণপত্রসহ মাত্র ১ জন ব্যক্তি রয়েছেন। তিনি দূতাবাসের পরিবর্তে নিজ বাসা থেকে কাজ করছেন।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র দপ্তরের আশঙ্কা, তারা যদি রাশিয়ান কূটনীতিকদের বহিষ্কার করতে চায় তাহলে মস্কোতে তাদের উপস্থিতি সম্পূর্ণভাবে হারাতে হতে পারে।

বেশ কয়েকজন পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞের পর্যবেক্ষণ হলো, 'সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়ায় রাশিয়ার ব্যাপারে সচেতনতা হ্রাস পেয়েছে, কারণ নিরাপত্তা সংস্থা এবং কূটনীতিকরা চীনের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই অস্ট্রেলিয়া ইউক্রেনের পক্ষে তার দৃঢ় অবস্থান ঘোষণা করেছে। সামরিক সাহায্য ছাড়াও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের জনগনের জন্য প্রায় ৭৫ মিলিয়ন ডলারের সাহায্য পাঠিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তাসহ ১৭৫ জন বিশিষ্ট নাগরিককে রাশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

আকিদুল ইসলাম : অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Uncertainty created as specific polls date has not been announced: Tarique

Tarique reiterated the demand that the national election be held by December

59m ago