মার্কিন বাজারে বিক্রি বাড়ছে, অর্ডার আসছে বাংলাদেশে

ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ এ একটি স্টল। ছবি: রাশেদ সুমন

মার্কিন বাজারে বিক্রি বাড়তে থাকায় আন্তর্জাতিক পোশাক বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডের অর্ডার বাড়ছে, যা বাংলাদেশের পোশাক প্রস্ততকারকদের স্বস্তি দিচ্ছে।

ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন (এনআরএফ) প্রেসিডেন্ট ও সিইও ম্যাথিউ সায় বলেছেন, 'ভোক্তারা মূল্যস্ফীতি ও উচ্চ মূল্যের চাপের মধ্যে রয়েছেন এবং বিভিন্ন আয়ের পরিবারে ব্যয় কমানোর চেষ্টা থাকলেও তাদের কেনাকাটা ধীরে ধীরে বাড়ছে।'

অক্টোবরে এনআরএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি ৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে ৯৬০ বিলিয়ন ডলার হতে পারে।

নভেম্বরের শুরুর দিকে রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন ভোক্তাদের দাম অক্টোবরে প্রত্যাশার চেয়ে কম বেড়েছে। গত ৮ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো বার্ষিক বৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে নেমেছে, যা মূল্যস্ফীতি মন্থর হওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী লক্ষণ।

পোশাক রপ্তানিকারক এনভয় টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ জানান, অর্ডার ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করেছে। পশ্চিমা বিশ্বে ক্রিসমাসের বিক্রি শুরু হওয়ায় তাদের স্টক দ্রুত কমছে।

প্রধান খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডের গুদাম পুরানো পণ্যে ভর্তি ছিল। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি মূল্যস্ফীতির চাপ কমে আসায় বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে।

কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'ধারণা করছি কার্যাদেশ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে। কারণ পশ্চিমা দেশের মানুষ করোনা মহামারির মধ্যে পরপর ৩টি বড়দিন উদযাপন করতে পারেনি। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এই বড়দিনে ব্যাপক বিক্রি হবে।'

গত ৩ মাসে বাংলাদেশে অর্ডারের প্রবাহ কম ছিল। ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মারাত্মক প্রভাবে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা পুরনো অবিক্রীত পোশাক বিক্রি করার অপেক্ষায় ছিল।

পোশাক রপ্তানিকারক হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও এ কে আজাদ বলেন, এবারের 'থ্যাঙ্কসগিভিং সেল' আশানুরূপ হয়নি।

তিনি বলেন, 'কাজেই, বড়দিনে ভোক্তাদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ার সম্ভাবনাও আছে। এটা যদি সত্যি হয় তাহলে আন্তর্জাতিক খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডের অর্ডার আগামী বছরের আগস্ট পর্যন্ত বাড়বে না।'

গত বছরের একই মৌসুমের তুলনায় বাংলাদেশ এ পর্যন্ত প্রায় ২০ শতাংশ কম অর্ডার পেয়েছে।

ডিবিএল গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম এ জব্বার বলেন, এটা সত্য যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ক্রমান্বয়ে অর্ডার বাড়ছে, কিন্তু দাম বাড়ছে না।

তিনি বলেন, 'অনেক কাজের অর্ডার চীন থেকে বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হচ্ছে।'

এম এ জব্বার জানান, স্থানীয় স্পিনাররা তাদের পুরনো মজুদ কমাতে ২০ শতাংশ কম দামে সুতা বিক্রি করছেন।

পোশাকের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশীয় সুতার বিক্রি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শহীদুল্লাহ আজিম জানান, মার্চের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রেতারা আগ্রহ দেখাচ্ছে, কিন্তু অর্ডার দেননি।

বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, 'গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চে আমরা যেভাবে অর্ডার পেয়েছি সেভাবে এখন অর্ডার আসছে না। তবে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। তবে, কিছু কারখানা নির্দিষ্ট পণ্যের প্রচুর অর্ডার পাচ্ছে।'

যুদ্ধের কারণে অস্থির ইউরোপীয় বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠছে। তাই স্থানীয় রপ্তানিকারকরা এশিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে মনোনিবেশ করা শুরু করেছে বলে জানান ফারুক হাসান।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia’s janaza held

The namaz-e-janaza of BNP Chairperson Khaleda Zia was held at the South Plaza of the Jatiya Sangsad Bhaban today

6h ago