মার্কিন তুলা দিয়ে বানানো পোশাকের শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ

ফাইল ফটো

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চূড়ান্ত দফার শুল্ক আলোচনায় আবারও মার্কিন তুলা দিয়ে বানানো পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের জন্য চাপ দেবেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

এতে সুফল না হলে সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক হার কমানো নিয়ে দর কষাকষি করবে।

পোশাক রপ্তানিকারকরা বহুদিন ধরেই ওয়াশিংটনের কাছে আমদানি করা মার্কিন তুলা থেকে তৈরি বাংলাদেশি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মার্কিন সরকার শূন্য শুল্কের দাবি না মানলে সব ধরনের পোশাকের ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখাটা মেনে নেওয়া হবে।'

'তবে ৩৫ শতাংশ নয়', বলছেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য শওকত আজিজ রাসেল। তিনি সরাসরি আলোচনায় অংশ নেবেন না। আলোচনায় শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের থাকার কথা।

প্রতিনিধি দলে আরও দুই ব্যবসায়ী আছেন। তাদের একজন সয়াবিন আমদানিকারক। অন্যজন তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ব্যবসায়ী।

শওকত আজিজ রাসেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশ প্রতি বছর চার বিলিয়ন ডলারের তুলা আমদানি করে। এর পাঁচ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।'

তিনি মনে করেন, 'অন্যান্য দেশের তুলনায় গুণগত মান ভালো হওয়ায় এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের তুলা সহজেই আমদানি করা যায়।'

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রচুর পরিমাণ তুলা আমদানি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে পারে।

তিনি জানান, কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের বার্ষিক তুলা চাহিদার ১৮ শতাংশ মেটাতো যুক্তরাষ্ট্র।

সম্প্রতি তুলা আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও কারখানার মালিকরা অন্য দেশ থেকে তুলা কেনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি কমেছে। এখন তুলা আসে মূলত আফ্রিকা থেকে।

'ভালো মানের কারণে মার্কিন তুলার দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় দুই থেকে তিন সেন্ট বেশি,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা বাংলাদেশে আনতে ৯০ দিনের বেশি সময় লাগে।'

বাংলাদেশের এক এলপিজি ব্যবসায়ী জানান, সরকারি আলোচনার ফাঁকে তিনি মার্কিন এলপিজি রপ্তানিকারকদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুই দেশের বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ এলপিজি আমদানি করতে পারে।' ব্যবসায়ীরা এলপিজি আমদানির উপায় খুঁজতে মার্কিন রপ্তানিকারকদের সঙ্গে আলোচনা করছেন বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অপর সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে কীভাবে বেশি করে মার্কিন সয়াবিন আমদানি করা যায় তা খতিয়ে দেখবেন।

সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলের (ইউএসএসইসি) কর্মকর্তারাও বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ট্রাম্পের নতুন পাল্টা শুল্ক হার আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। বাংলাদেশের সঙ্গে তৃতীয় দফার আলোচনা ২৯ জুলাই শুরু হয়ে আজ ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

Comments