সালতামামি

বিবিসির চোখে ২০২৫-এর শীর্ষ ২৫ চলচ্চিত্র

ছবি: এআই

বিবিসির চলচ্চিত্র সমালোচক ক্যারিন জেমস ও নিকোলাস বার্বার ২০২৫ সালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও আলোচিত ২৫ চলচ্চিত্রের তালিকা প্রকাশ করেছেন।

তালিকায় স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ঘরানার ২৫ টি চলচ্চিত্র। ঐতিহাসিক ড্রামা, কমেডি, পলিটিকাল থ্রিলার, হরর, তথ্যচিত্র, পারিবারিক নাটক ও পরীক্ষাধর্মী সিনেমা প্রায় সব ঘরানাই উঠে এসেছে এ তালিকায়।

হ্যামনেট

শোলো ঝাও পরিচালিত এই আবেগময় চলচ্চিত্রটি ম্যাগি ও'ফ্যারেলের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। শেকসপিয়ারের ছেলের মৃত্যুর গল্প এতে শক্তিশালী অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

জেসি বাকলি ও পল মেস্কালের অভিনয় ছবিটির আবেগকে আরও গভীর করেছে।

স্যরি, বেবি

ইভা ভিক্টরের লেখা, পরিচালনা ও অভিনয়ে নির্মিত এই ইন্ডি কমেডি–ড্রামায় একজন শিক্ষিকার অতীত এবং যৌন নিপীড়নের স্মৃতি বর্তমান জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখানো হয়। সাহসী উপস্থাপনা ও বন্ধুত্বের আন্তরিক চিত্রায়ন ছবিটিকে অনন্য করেছে।

ইজ দিস থিংস অন?

ব্র্যাডলি কুপারের পরিচালিত তৃতীয় চলচ্চিত্র এটি। ক্ষুদ্র পরিসরের স্ট্যান্ড-আপ কমেডির জগৎ নিয়ে তৈরি এই ড্রামা। এখানে উইল আরনেট অভিনয় করেছেন একজন ক্লান্ত কর্মজীবী কমেডিয়ানের ভূমিকায়, যিনি মঞ্চে উঠে নানা সংকটের মুখোমুখি হন।

ওয়ান ব্যাটল আফটার অ্যানাদার

পল থমাস অ্যান্ডারসনের পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি প্রচণ্ড গতিশীল। সেইসঙ্গে হাস্যরস আর পারিবারিক গল্পের মিশেলে হয়ে উঠেছে দুর্দান্ত এক সিনেমা। লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এখানে তার প্রাণবন্ত কমেডি অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করছেন আবারও।

নো আদার চয়েজ

পার্ক চ্যান-উকের ব্যঙ্গাত্মক, ডার্ক ওয়ার্ল্ডের প্রহসন এই চলচ্চিত্রটি। চাকরি হারানো এক কাগজ কারখানার ব্যবস্থাপক তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের হত্যা করে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও চাকরি সংকট নিয়ে নির্মিত সিনেমাটি সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক।

দ্য সিক্রেট এজেন্ট

১৯৭৭ সালের ব্রাজিলের সামরিক শাসনের প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার এটি। সমাজের গভীরে একনায়কতন্ত্রের প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে আগ্রহউদ্দীপক কায়াদায়।

ওয়াগনার মউরার অভিনয় ছবিটিকে আরও শক্তিশালী করেছে।

দ্য ভয়েজ অব হিন্দ রাজাব

গাজার পাঁচ বছর বয়সী হিন্দ রাজাবের বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত তিউনিসিয়ান এই চলচ্চিত্র বছরের অন্যতম মর্মান্তিক কাজ।

এতে ব্যবহৃত হয়েছে শিশুটির প্রকৃত কণ্ঠস্বরের রেকর্ড আর যুদ্ধের নিষ্ঠুরতার উত্তাল চিত্র।

সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু

জোয়াকিম ত্রিয়ে নির্মিত এক আন্তরিক পারিবারিক গল্পের চলচ্চিত্র এটি। একজন চলচ্চিত্র পরিচালক ও তার দুই প্রাপ্তবয়স্ক কন্যার জটিল সম্পর্ক এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

রেনাতে রেইনসভে ও ইংগা ইবসডট্টের লিলিয়াসের বাস্তবসম্মত অভিনয় ছবিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

ইট ওয়াজ জাস্ট অ্যান অ্যাক্সিডেন্ট

জাফর পানাহির সর্বশেষ চলচ্চিত্র। ইরানে নিষেধাজ্ঞার কারণে গোপনে নির্মিত এ ড্রামায় দেখানো হয়েছে ভুল পরিচয়ের কারণে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খলা। রাজনৈতিক বিষয় থাকলেও ছবিটিতে গভীর মানবিকতা তুলে ধরা হয়েছে।

মার্টি সুপ্রিম

জশ স্যাফডির নির্মিত ১৯৫০-এর দশকের নিউইয়র্কভিত্তিক এই চলচ্চিত্র এটি। এক প্রতারক তরুণের জীবন নিয়ে আবর্তিত এ সিনেমার গল্প। টিমোথি শ্যালামে তার আকর্ষণীয় অভিনয়ে চরিত্রটিকে কৌশলী এবং শৈল্পিক করে তুলেছেন। সেই সময়ের নিউইয়র্কের রাজনীতি, অপরাধ ও ব্যক্তিগত টিকে থাকার লড়াই ছবিতে অনন্য আবহ সৃষ্টি করেছে।

ওয়েক আপ ডেডম্যান

রায়ান জনসনের নতুন রহস্য-থ্রিলার এটি। যেখানে পর্দার জেমস বন্ড ড্যানিয়েল ক্রেগ আবারও গোয়েন্দা হিসেবে ফিরেছেন। রবে এবার তার নাম বেনোয়া ব্লাঁ। চলচ্চিত্রে ব্লাঁ জড়িয়ে পড়েন ধর্মীয় চরমপন্থা, প্রতারণা ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের জটিল ধাঁধায়।

ফাদার মাদার সিস্টার ব্রাদার

তিনটি শহর, তিনটি পরিবার এবং সম্পর্কের ভাঙাগড়ার ছোট ছোট মুহূর্তকে সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরা হয়েছে এ চলচ্চিত্রে। ভুল বোঝাবুঝি, অব্যক্ত ক্ষোভ, পারিবারিক দূরত্ব ও অপূর্ণতার যন্ত্রণা এখানে মূল উপজীব্য।

উইপনস

জ্যাক ক্রেগারের তৈরি এই চলচ্চিত্রটি একটি রহস্য-ড্রামা। শুরুতেই ১৭ শিশুর হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এক আতঙ্কের সৃষ্টি করে।

পুরো গল্পটি বিভিন্ন চরিত্রের চোখ দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অংশে উন্মোচিত হয়—যা ছবিকে ধাপে ধাপে আরও অস্থির, ডার্ক ও রহস্যময় করে তোলে।

হাইয়েস্ট টু লোয়েস্ট

স্পাইক লির নির্মিত থ্রিলার এটি। ভুল পরিচয়জনিত এক অপহরণে জড়িয়ে পড়ে একজন সফল সংগীত ব্যক্তিত্ব।

ধীরে ধীরে তিনি টের পান সত্য-মিথ্যা, নৈতিকতা আর বেঁচে থাকার সীমারেখা কোথায় মিলেমিশে যায়। চলচ্চিত্রটি আকিরা কুরোসাওয়ার ১৯৬৩ সালের 'হাই অ্যান্ড লো'থেকে অনুপ্রাণিত।

ব্রিং হার ব্যাক

এটি একটি ভৌতিক–ড্রামা। অনাথ দুই ভাইবোন ও তাদের প্রতি অতিমাত্রায় মায়ামমতা দেখানো পালক মা ও অলৌকিক ঘটনার মিশেলে তৈরি হয়েছে এক শক্তিশালী গল্প।

ম্যাটেরিয়ালিস্টস

সেলিন সংয়ের এই বুদ্ধিদীপ্ত রোমান্টিক ড্রামাটি দেখায়—অর্থ, সম্পর্ক ও বিবাহ আসলে কত গভীরভাবে জড়িত। ডাকোটা জনসন এখানে অভিনয় করেছেন লুসির ভূমিকায়। যিনি একজন পেশাদার ম্যাচমেকার এবং নিজের জীবনে দুই পুরুষ নিয়ে পড়েছেন দোটানায়।

দ্য ব্যালাড অব ওয়ালিস আইল্যান্ড

এই ব্রিটিশ কমেডিতে টিম কি অভিনয় করেছেন চার্লস নামে এক অদ্ভুতুড়ে লটারি–জয়ীর চরিত্রে।

তিনি নিজের প্রিয় লোকজ সংগীত-যুগল হার্ব ম্যাকগুইয়ার ও কেরি মুলিগানকে তার ব্যক্তিগত দ্বীপে পারফর্ম করতে আমন্ত্রণ জানান। যদিও তারা বহু বছর আগে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন। কিন্তু চার্লস ইচ্ছাকৃতভাবে দুজনের কাছেই সেই তথ্য গোপন করেন।

লার্কার

অ্যালেক্স রাসেলের প্রথম চলচ্চিত্র এটি। এই মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলারটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে খ্যাতির বিপজ্জনক দিক তুলে ধরে। ম্যাথিউ (থেওদর পেলরাঁ) প্রথমে অতিরিক্ত এক ভক্ত হিসেবে দেখা দিলেও ধীরে ধীরে পপ তারকা অলিভার (আর্চি মাডেকওয়ে)–কে কেন্দ্র করে বিষাক্ত, প্যারাসোশ্যাল সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই ঘিরেই এগিয়েছে কাহিনী।

কম্প্যানিয়ন

জঙ্গলের কেবিনে বেড়াতে যাওয়া এক দম্পতির গল্প দিয়ে শুরু হওয়া এই ছবি দ্রুত বিজ্ঞানকল্প–থ্রিলারে রূপ নেয়। আধুনিক প্রযুক্তি ও মিসোজিনি নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ভাব প্রকাশ করা হয়েছে এই চলচ্চিত্রে।

সিনার্স

রায়ান কুগলারের ভ্যাম্পায়ার–ড্রামা–পিরিয়ড ফিউশন। বর্ণবাদ, বিশ্বাস, পরিবার ও অতিপ্রাকৃত উপাদান একসঙ্গে মিশে গেছে শক্তিশালী বয়ানে।

আর্ট ফর এভ্রিবডি

মিরান্ডা ইউসুফের তথ্যচিত্রটি জনপ্রিয় শিল্পী থমাস কিনকেডের জীবন নিয়ে তৈরি—যার আরামদায়ক, আবেগ-ভরা গ্রামীণ কটেজের ছবিগুলো সাধারণ মানুষের মাঝে জনপ্রিয় হলেও সমালোচকদের নাক সিঁটকানো মনোভাবের মুখে পড়েছিল। চলচ্চিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে—কোন শিল্প 'উচ্চমানের' এবং কারা তা ঠিক করে?

ওয়ারফেয়ার

নেভি সিলস ও আল-কায়েদার বাস্তব সংঘর্ষ অবলম্বনে নির্মিত তীব্র যুদ্ধের সিনেমা এটি। যুদ্ধের মানবিক মূল্যকেও সামনে আনে এই ছবি। যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রে নতুন ধরনের গভীরতা যোগ করেছে এই কাজ।

হোলি কাউ

ফরাসি গ্রামাঞ্চলে ভাই-বোনের দায়িত্ব, দারিদ্র্য আর কঠিন কৃষিজীবনের গল্প। শেষ পর্যন্ত এক আশাব্যঞ্জক যাত্রা।

ওয়ালেস এন্ড গ্রোমিট: ভেনজেন্স মোস্ট ফাওল

আরডম্যানের প্রিয় দুই চরিত্র ওয়ালেস ও গ্রোমিট ফিরে এসেছে—সঙ্গে আবার দেখা মিলেছে তাদের কুখ্যাত শত্রু, দুষ্টু পেঙ্গুইন ফেদার্স ম্যাকগ্রার।

নিক পার্ক ও মার্লিন ক্রসিংহামের পরিচালনায় অস্কার-মনোনীত এই চলচ্চিত্রটি সূক্ষ্ম হাতে তৈরি অ্যানিমেশন।

অন বিকামিং অ্যা গিনি ফাওল

যৌন নিপীড়ন, গোপনীয়তা ও প্রজন্মগত দূরত্ব নিয়ে নির্মিত শক্তিশালী ড্রামা এটি। বাস্তবধর্মী ও অতিপ্রাকৃত উপস্থাপনা মিশে একাকার হয়েছে গল্পে।

Comments

The Daily Star  | English
Sharif Osman Hadi dies in Singapore

Sharif Osman Hadi no more

Inqilab Moncho spokesperson dies in Singapore hospital

11h ago