অরক্ষিত উপকূল, ঝুঁকিতে ভোলা-পটুয়াখালীর নিচু এলাকা

ভোলার তুলাতলিতে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে বালুর ব্যাগ ফেলছে পাউবো। ছবি: মনির উদ্দিন অনিক/স্টার

ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের কারণে অরক্ষিত অবস্থায় আছে দেশের উপকূলীয় এলাকা। এ ঝুঁকির কারণে বেশি আতঙ্কে আছে ভোলা ও পটুয়াখালীর নিচু এলাকার বাসিন্দারা। 

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময় বরিশাল বিভাগে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, তা পুরোপুরি মেরামত করা হয়নি। জরুরি মেরামতের অংশ হিসেবে বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। 

এতে এবারের অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' নিয়ে আতঙ্কে উপকূলীয় এলাকার মানুষ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভোলা ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। 

ঘূর্ণিঝড়ের আগ মুহূর্তে মেরামত কতটুকু কাজে লাগবে এ নিয়ে উপকূলবাসী উদ্বিগ্ন। তাদের দাবি স্থায়ী, শক্ত ও বেশি উঁচু বাঁধ।

ভোলার সদর উপজেলার তুলাতলিতে মেঘনা নদীর তীরের বাসিন্দা নূরজাহান বেগম জীবনে বেশ কয়েকবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জীবনে ৭ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। এখন বাঁধের পাড়েই বাসা। ঝড় নিয়ে ভয় করে আর কী হবে। সময় হলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব।'

বাঁধের পাড়ের আরেক বাসিন্দা ইব্রাহিম বলেন জানান, 'ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে প্রাণ হাতে নিয়ে বসবাস করছি। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যেতে পারে।'

আজ শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাউবোর বাঁধের বিভিন্ন স্থানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, ভোলার অন্তত শতাধিক চর আছে, যেগুলো অল্প জোয়ারেই ৬-৭ ফুট প্লাবিত হয়।

পাউবো ভোলা বিভাগ-১ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই বিভাগে ১৬৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আছে। সিত্রাংয়ের সময় কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৫৩৪ মিটার বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে।'

ভোলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসাইন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখায় জরুরি সাড়াদানের জন্য জেলার ৭৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ভোলার ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির উপপরিচালক আবদুর রশিদ জানান, জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় জেলায় ১৩ হাজার ৬০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত আছে।

এদিকে, পটুয়াখালী জেলায় বাঁধ আছে ১ হাজার ৩৩৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ১৮ কিলোমিটার।।

এ তথ্য নিশ্চিত করে পাউবো পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে প্রতি বছরই বাঁধ ভাঙে। এ কারণে ওই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।'

বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। এ ছাড়া নগদ ৯ লাখ টাকা ও ৮৯০ টন জিআর চাল বরাদ্দ হয়েছে। 
মোখা মোকাবিলায় বরিশাল বিভাগে ৩২ হাজার ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত আছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

পাউবো বরিশাল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্র জানায়, বিভাগে বাঁধের ১৭৪টি পয়েন্টে উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Jamaat rally begins at Suhrawardy Udyan with cultural programme

The first phase of Bangladesh Jamaat-e-Islami's rally at the historic Suhrawardy Udyan in Dhaka began this morning with a cultural programme

1h ago