৩১ ঘণ্টায় ৩ বার ভূমিকম্প: ঝুঁকি নিয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
গত ৩১ ঘণ্টায় মোট তিনবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশে। সবশেষ আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটের দিকে অনুভূত ভূমিকম্পের মাত্রা ৪ দশমিক ৩ বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর আগে সকালে ৩ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। শুক্রবার সকালের ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই শিশুসহ ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সামনে আরও বড় আকারে ভূমিকম্প আসতে পারে কিনা—এমন প্রশ্ন এখন মানুষের মনে।
বিষয়টি নিয়ে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল ভূমিকম্প হলো এবং আজ যে ভূ-কম্পনগুলো হলো, এগুলোকে "আফটারশক" বলব আমি। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। দু-তিনদিন পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অবশ্যই এর তাৎপর্য হলো ভূ-গর্ভে বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হবে।'
তিনি বলেন, 'যেহেতু গতকাল একটা মাঝারি ভূমিকম্প হয়েছে। এরপর ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আরও দুটো ভূমিকম্প একই এলাকায় হলো। অর্থাৎ, ওই শক্তিটা নিকট ভবিষ্যতে যেকোনো সময় বের হতে পারে।'
'আমরা একটা বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছি' বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, 'একমাত্র রক্ষার উপায় হচ্ছে ড্রিল এবং তার আগে সচেতনতা বাড়ানো। টেকনোলজি বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ন্যাচারাল হ্যাজার্ড গেম তৈরি করে ৩-৬ মাসের মধ্যে জনগণকে সচেতন করলে সবার মনোবল বৃদ্ধি পাবে।'
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '৩৬ ঘণ্টায় ৩ বার ভূ-কম্পন অনুভব করেছি আমরা। এগুলো আফটারশক না ফোরশক—সেটা বলা মুশকিল।'
তিনি বলেন, 'আগামী ২-৩ দিন দেখতে হবে, আরও হয় কিনা। হলে বলতে হবে সামনে আরও বড় কিছু আসছে। অর্থাৎ, আরও পর্যবেক্ষণ করা উচিত।'
তিনি আরও বলেন, 'দু-একটা দিয়ে বিচার করা যাবে না। বড় ভূমিকম্পের আগে এরকম অজস্র শক হয়। বলা মুশকিল যে সামনে আরও বড় ভূমিকম্প আসবে কিনা। যদি গতকালের ৫ দশমিক ৭ মাত্রাকে বড় ধরি, তাহলে আজকের দুটো আফটারশক।'
'কিন্তু এত ঘন ঘন বাংলাদেশে আগে ভূমিকম্প হয়নি। আমার মনে হয় একটু অপেক্ষা করি। তারপর বলা যাবে আরও বড় আসছে কিনা। সবাই একটু ধৈর্য ধরি,' যোগ করেন তিনি।


Comments