‘সেন্টমার্টিনের আশ্রয়কেন্দ্রে সারাদিনে খাবার শুধু এক পিস কেক’

প্রচণ্ড বাতাসে সেন্টমার্টিনে কয়েকশ গাছ ভেঙে পরেছে বলে জানিয়েছেন সেখানে অবস্থানরতরা। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

সেন্টমার্টিনের হাসপাতালে স্থাপিত আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ মানুষ। ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কের পাশাপাশি তাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে ক্ষুধার যন্ত্রণাকেও। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের অভিযোগ, আজ সকালে কেবল এক পিস কেক দেওয়া হয়েছিল তাদের। এরপর আর কোনো খাবার পাননি তারা।

পর্যটন ব্যবসায়ী তকি উসমানি আজ রোববার বিকাল ৪টার দিকে আশ্রয়কেন্দ্রটি থেকে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন 'সকালে এক পিস কেক দিয়েছিল। সেন্টমার্টিনের আশ্রয়কেন্দ্রে সারাদিনে খাবার দিয়েছে শুধু ওই এক পিস কেক। এরপর আর কোনো খাবার নেই। রান্নাও করা হয়নি।'

সেন্টমার্টিনে ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব বইছে প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস। সেখানকার পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। ঝড়ের প্রভাবে চারপাশে ঠিকমতো কিছু দেখাও যাচ্ছে না। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করে বেঁচে থাকা সেন্টমার্টিনের সাহসী মানুষগুলোও এমন পরিবেশে আতঙ্কে আছেন।

প্রচণ্ড বাতাসে সেন্টমার্টিনে কয়েকশ গাছ ভেঙে পরেছে বলে জানিয়েছেন সেখানে অবস্থানরতরা। এমনকি হতাহতের খবরও পাওয়া গেছে। যদিও, দ্য ডেইলি স্টার স্বাধীনভাবে এর কোনো তথ্যই যাচাই করতে পারেনি।

তকি উসমানি বলেন, 'আমরা সেন্টমার্টিন হাসপাতালে স্থাপিত আশ্রয়কেন্দ্রের ৩ তলায় আছি। এই আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ মানুষ। প্রচণ্ড বাতাস, অনেক গাছপালা ভেঙে গেছে। অল্প কিছু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এসে উঠেননি। খবর পেয়েছিলাম গাছ ভেঙে পড়ে তাদের মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন, যদিও সেটা নিশ্চিত হতে পারিনি। ঝড় থামার আগে কোনোদিকে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। ঝড় থামলে তারপর নিশ্চিত হওয়া যাবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এখনো তো তুফান শুরুই হয়নি। এখনই ১০০ থেকে ১৫০ নারিকেল গাছ ভেঙে পড়ে গেছে, আরও অনেক গাছ ভেঙেছে। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।'

সেন্টমার্টিনের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত অপর একজন শাহনাজ পারভীন। তিনি সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং একজন স্বেচ্ছাসেবকের আত্মীয়। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'এখনো তীব্র ঝোড়ো বাতাস বইছে। সময়ের সঙ্গে বাতাসের তীব্রতাও বাড়ছে। আমরা শুনেছিলাম যে একজন মারা গেছেন। পরে শুনলাম, তিনি আহত হয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরের খবর আমরা খুব বেশি পাচ্ছি না।'

সেন্টমার্টিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখনো ঝড় হচ্ছে, প্রচণ্ড বাতাস বইছে। তবে, সেন্টমার্টিনে অবস্থানরত মানুষ নিরাপদে আছেন। আমরা সেখান থেকে বেশ কিছু ভিডিও পেয়েছি, যেখানে দেখা যাচ্ছে যে গাছপালা ভেঙে যাচ্ছে। ঝড় থামলে তারপর আমরা নিরূপণ করতে পারব যে কি পরিমাণ গাছ ভেঙেছে এবং কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।'

হতাহতের খবর পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'কোনো হতাহতের খবর আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। কয়েকজনের ফেসবুকে দেখেছি আহত ও নিহত হওয়ার খবর লিখেছেন। কিন্তু সেগুলো যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনো।'

আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হলেও আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার দেওয়া গেল না কেন জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, 'আশ্রয়কেন্দ্রে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা অবস্থান করে সার্বিক বিষয় দেখভাল করছেন। এখন আশ্রয়কেন্দ্রসহ পুরো সেন্টমার্টিনের যে পরিস্থিতি তাতে রান্না করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা শুকনো খাবার দিয়ে এখনকার সময়টা পার করার চেষ্টা করছি। খাবারের সব ব্যবস্থা করা আছে। ঝড় কমলে রান্নার ব্যবস্থা হবে।'

পরিস্থিতি জানতে সেখানে অবস্থানরত সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যানের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

 

Comments

The Daily Star  | English
Milestone Jet crash

Milestone crash: Brother dies a day after sister

Death toll now 32; Aryan Nasraf Nafi, 9, died at 12:15am; Eldest sister, Nazia Tabassum Lizu, 13, died Monday

1h ago