চট্টগ্রামে ভরাট হচ্ছে শতবর্ষী পুকুর, ব্যাখ্যা চেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর
চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ের ফরিদারপাড়া এলাকায় বালু ফেলে শতবর্ষী একটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন সপ্তাহ আগে থেকে শতবর্ষী পুকুরটি বালু দিয়ে ভরাট কাজ শুরু হয়। পুকুরের ভরাটকৃত অংশের মালিকের নাম খোরশেদ আলম ও তৈয়ব।
আনোয়ার হোসেন নামে একজন তৈয়বের কাছ থেকে পুকুরের একাংশ কেনার জন্য বায়না করে পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করেন।
সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক সরেজমিনে ওই এলাকায় দেখতে পান, পুকুরটির পানি শুকিয়ে যাওয়ায় গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলার কারণে এটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে।
তবে বছরের বেশিরভাগ সময়ই পুকুরটিতে পানি থাকে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তারা আরও জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা পুকুরটির পানি গোসল ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করেন। একইসঙ্গে পুকুরটির পানি এলাকায় অগ্নিনির্বাপণেরও অন্যতম উৎস।
স্থানীয়ভাবে পুকুরটি 'আফিয়ার বাপের পুকুর' নামে পরিচিত। ইতোমধ্যে ৫২ শতাংশ আয়তনের পুকুরটির দক্ষিণ পাশের একাংশ বালু দিয়ে ভরাট কাজ শেষ হয়েছে। পুকুরের ভরাট কাজ শুরু হওয়ার আগে পূর্বেই ভরাটের জন্য বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়।
পুকুর ভরাটের বিষয় জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন ৫-৬ ট্রাক বালু ফেলার কথা স্বীকার করেন। তিনি ডেইলি স্টারক বলেন, 'আমি তিন শতক জমি কেনার জন্য বায়না করেছিলাম। তৈয়ব বলেছিলেন, তিনি জায়গাটা ভরাট করে দেবেন। কিন্তু আইনি ঝামেলা শুরু হওয়ায় আমি বায়নাটি বাতিল করেছি এবং তৈয়বের কাছ থেকে টাকা ফেরত নিয়েছি।'
পুকুরের অপর মালিক খোরশেদ আলম পুকুর ভরাটের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তৈয়বের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।
সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তর অবৈধভাবে পুকুরটি ভরাটের প্রমাণ পেয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পরিবেশ অধিদপ্তর ভরাটের সঙ্গে জড়িত ও জমি মালিকদের চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয় এসে শুনানিতে হাজির থাকার জন্য নোটিশ দিয়েছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুকুর ভরাটের বিষয়ে আমরা তিনজনকে নোটিশ দিয়েছি, তারা কেন পুকুর ভরাট করেছেন সেটির ব্যাখ্যা দিতে হবে।'
শুনানির পর জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কোনো ব্যক্তি প্রাকৃতিক জলাধার ভরাট করলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী অপরাধীদের পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।


Comments