বছরের ব্যবধানে ১৩৫ শতাংশ বেড়ে জিরার কেজি ৯৬০ টাকা, অস্থিরতা পেঁয়াজ-আদায়

বছরের ব্যবধানে ১৩৫ শতাংশ বেড়ে জিরার কেজি ৯৬০ টাকা, অস্থিরতা পেঁয়াজ-আদায়
ছবি: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি জিরার দাম বেড়েছে ৫৫২ টাকা। যা পূর্বের দামের চেয়ে ১৩৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের ১৮ জুলাই প্রতি কেজি জিরার দাম ছিল ৪০৮ টাকা।

আজ রোববার সেই জিরা বিক্রি হচ্ছে ৯৬০ টাকা কেজি দরে।

কারওয়ান বাজার মসলার দোকান সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মে মাসে প্রতি কেজি জিরার দাম ছিল ৪০৩ টাকা। জুলাই মাসে তা বেড়ে হয় ৪০৮ টাকা। চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রতি কেজি জিরার দাম ছিল ৬০০ টাকা এবং এপ্রিলে বেড়ে দাঁড়ায় ৬৮৫ টাকা।

আজ প্রতি কেজি লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। গত এপ্রিলে লবঙ্গের দাম ছিল প্রতি কেজি দেড় হাজার টাকা। ১ মাসের ব্যবধানে এলাচের দাম প্রতি কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকায়।

ছবি: সুমন আলী

এদিন প্রতি কেজি গোল মরিচ ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, দারুচিনি ৪৫০ টাকা এবং প্রতি কেজি ধনিয়া ২২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মসলা ব্যবসায়ী মেসার্স উপহার স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. চুন্নু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক বছরের ব্যবধানে ৩০ কেজির ১ বস্তা জিরার দাম বেড়েছে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা। মোকাম থেকে এখন ১ বস্তার বেশি জিরা দিতে চায় না। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের ছোট ছোট দোকানে তদারকি করা হয় কিন্তু যারা এই দাম বাড়ার সঙ্গে সম্পর্কিত তাদের ওখানে তদারকি করা হয় না।'

জিরাসহ অন্যান্য মসলার দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা যখন কিনতে যাই তখন আমাদের বলা হয় ডলার সংকট, এলসি (আমদানি ঋণপত্র) দিতে চায় না এ কারণে দাম বেশি।'

আজ কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। গত ৩ মার্চ প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০ টাকা। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।

৮১ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৫ জুন থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার। সরকারের এই ঘোষণার পর পরই পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমে ৮০ টাকায় নেমে আসে। এরপর আর পেঁয়াজের দাম কমেনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ মেট্রিক টন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি, এ বছর দেশীয় উৎপাদন ছিল প্রায় ৩৪ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু মজুত সুবিধার অভাবে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে দেশে এখনো প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টন পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েছে।

রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে। গত মার্চ মাসে এই রসুনের দাম ছিল ১৪০ টাকা। শুকনা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা। থাইল্যান্ডের আদা ৩৫০ টাকা ও ভারতীয় আদা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের আদা ব্যবসায়ী মো. জসিম বলেন, 'চাহিদার তুলনা বাজারে আদার সরবরাহ কম। আমদানি করা হলেও তা খুব বেশি না। এ জন্য দাম অনেক বেশি। কোরবানি ঈদের পরে কিছুটা কমলেও কমতে পারে। তবে সম্ভাবনা খুব কম। চীনা আদা বাজারে না থাকায় এই সংকট তীব্র হয়েছে।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, দেশে আদার চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন। গত অর্থবছরে দেশে আদার উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। আমদানি করা হয়েছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৫ মেট্রিক টন।

এ বছর উৎপাদন কমে হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিক টন। গত অর্থবছরে ১৭ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে ১৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আদা চাষ হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

21h ago