দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিত্যপণ্যকেও বিলাসবহুল বানিয়ে ফেলেছে: সিপিডি

সিপিডি
ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা উপস্থাপন করতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিং। ছবি: স্টার

দেশে নিত্যপণ্যের দাম এতটাই বেড়েছে যে, তা কম আয়ের মানুষের কাছে সেগুলোকে বিলাসবহুল বলে মনে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি নয় শতাংশের বেশি থাকায় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এমন মন্তব্য করা হয়।

বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম অস্থির। ২০২৩ সালের এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল নয় শতাংশ। ২০২৩ সালের আগস্টে তা ১৩ শতাংশে পৌঁছায়। গত ফেব্রুয়ারিতে তা নয় শতাংশে নেমে আসে। এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি আবার বেড়ে ১০ শতাংশে দাঁড়ায়।

আজ রোববার ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা উপস্থাপন করতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১৯ মে পর্যন্ত মোটা চালের গড় দাম কেজিপ্রতি ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫২ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

'মিনিকেট' নামে পরিচিত চিকন চালের দাম কেজিতে ৫৮ টাকা থেকে ১৭ শতাংশ বেড়ে ৬৮ টাকা হয়েছে। পাইজাম চালের গড় দাম কেজিতে ১৫ শতাংশ বেড়ে ৫৫ টাকা হয়েছে।

আগের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সিপিডি আরও জানায়, ঢাকায় সাধারণ তিন ধরনের চালের দাম ধারাবাহিকভাবে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের চালের তুলনায় বেশি।

সয়াবিন তেলের দাম সম্পর্কে সিপিডির বলছে, এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্ববাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল বাংলাদেশি টাকায় ১০৫ টাকা। এটি দেশের বাজারে বিদ্যমান দামের তুলনায় কম।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে চিনির দাম প্রতি কেজি ৩৯ টাকা, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৯৬ টাকা ও বিশ্ববাজারে ৫০ টাকা।

এসব দাম বাংলাদেশের বাজারে চিনির বিদ্যমান দামের তুলনায় কম।

আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্বারোপ করে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'মনে হচ্ছে নিত্যপণ্যগুলো বিলাসবহুল পণ্যে পরিণত হয়েছে।'

প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, বেশকিছু চ্যালেঞ্জের কারণে দেশের অর্থনীতি বর্তমানে বেশ চাপে আছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারই বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

মোয়াজ্জেম বলেন, 'অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে দুর্বল ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করা নীতিনির্ধারকদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।'

মূল্যস্ফীতিতে জর্জরিত সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকারের নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামোতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার দিকে নজর দিতে হবে।'

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে দেশের অর্থনীতি ইঙ্গিত দেয় যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া ইতিবাচক উদ্যোগ সত্ত্বেও অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতেও একই পরিস্থিতি থেকে যাবে।

'কারণ যেকোনো নীতির ফলাফল দেখতে একটু সময় লাগে। তবে যেকোনো নীতির কার্যকারিতা অন্যান্য ক্ষেত্রে সহায়ক নীতিমালার ওপরও নির্ভর করে,' যোগ করেন গোলাম মোয়াজ্জেম।

Comments

The Daily Star  | English

Secretariat employees protest against govt service law

From 9:30am, officers and staff started gathering in front of building no. 6 at the Secretariat's Badamtola.

14m ago