ছেলেকে ক্ষমা করলেন বাইডেন

হ্যানকক বিমানবন্দরে জো ও হান্টার বাইডেন। ফাইল ছবি: এএফপি
হ্যানকক বিমানবন্দরে জো ও হান্টার বাইডেন। ফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার সন্তান হান্টার বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা করে দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার শেষ কয়েকটি উদ্যোগের অংশ হিসেবে গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান।

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

হান্টারের সাজার ঘটনাকে তিনি সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে আদালতের ব্যর্থতা বলেও মন্তব্য করেন।

যা বললেন বাইডেন

চার্চ থেকে বের হয়ে এসে ভক্তদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন জো বাইডেন। পাশে সন্তান হান্টার। ফাইল ছবি: এএফপি
চার্চ থেকে বের হয়ে এসে ভক্তদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন জো বাইডেন। পাশে সন্তান হান্টার। ফাইল ছবি: এএফপি

দুটি ফৌজদারি অপরাধে হান্টার বাইডেনের কারাদণ্ড হয়েছে। তবে এর আগে ছেলের বিচারকাজে হস্তক্ষেপ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন।

এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, 'হান্টারের মামলার তথ্য যাচাই করলে যে কেউ বুঝতে পারবেন, শুধু আমার ছেলে হওয়ার কারণে তাকে লক্ষ্য করে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আর এটা ভুল।'

বাইডেনের এই উদ্যোগে মার্কিন বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

এমন সময়ে এ ঘটনা ঘটল, যখন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) প্রধানকে নিজেই মনোনীত করেছেন। বিচার বিভাগেও তিনি নিজেই নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন।

হান্টার বাইডেন এ বছরের শুরুতে মাদক সেবন ও অস্ত্রের মালিকানা বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। এ ছাড়া কর ফাঁকির ঘটনাতেও তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। তবে এসব অভিযোগে কারাদণ্ড পাননি হান্টার।

বাইডেন বারবারই বলে এসেছেন, তিনি ছেলেকে কোনোমতেই ক্ষমা করবেন না।  

বিবৃতিতে বাইডেন জানান, তিনি বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করবেন না বলে জানিয়েছিলেন। ছেলেকে উদ্দেশ্যমূলক ও অন্যায় বিচারের মুখোমুখি হতে দেখেও তিনি প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসেননি।

'আমি বলেছিলাম বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করব না। আমি আমার কথা রেখেছি। কিন্তু একইসঙ্গে লক্ষ্য করলাম, আমার ছেলেকে আলাদা করে উদ্দেশ্যমূলক ও অন্যায়ভাবে বিচারের মুখোমুখি করা হল', যোগ করেন বাইডেন।

কংগ্রেসে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের উসকানিতে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করেন বাইডেন। নির্বাচনে বাইডেনের বিরোধিতা করতেই বিরোধী দলগুলো এমন উসকানি দিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

বিবৃতিতে বাইডেন আরও বলেন, 'আমি বিচারব্যবস্থার ওপর ভরসা রাখি। কিন্তু এ বিষয়টির সঙ্গে লড়তে যেয়ে আমার উপলব্ধি হল, খাঁটি রাজনীতি এই প্রক্রিয়াকে আক্রান্ত করেছে এবং এতে বিচারব্যবস্থায় পচন ধরেছে'।  

এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের নিজের পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করার জন্য এমন ক্ষমা প্রদর্শনের উদাহরণ রয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন কোকেন–সংক্রান্ত মামলায় তার সৎভাইকে ক্ষমা করেছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পও তার আগের মেয়াদে কর ফাঁকির মামলায় মেয়ের শশুরকে ক্ষমা করেন। তারা সবাই কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন।

হান্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্ত্রীর সঙ্গে হান্টার বাইডেন। ফাইল ছবি: এএফপি
স্ত্রীর সঙ্গে হান্টার বাইডেন। ফাইল ছবি: এএফপি

গত সেপ্টেম্বর মাসে কর ফাঁকির মামলায় হান্টার বাইডেনের ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়। এ ছাড়া বন্দুক–সংক্রান্ত আলাদা মামলায় তাঁর ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয়।

ইতোমধ্যে বকেয়া কর ও অন্যান্য জরিমানা পরিশোধ করেছেন হান্টার। এর আগে তিনি বিচারবিভাগের সঙ্গে একটি আপসে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে তার কারাদণ্ড মওকুফ করা হোত। কিন্তু শেষ মুহুর্তে সেই চুক্তি ভেস্তে যায়।

বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণার পুরোটা সময় হান্টারের এসব আইনী ঝামেলা তাকে বিব্রত করেছে। রিপাবলিকানরা বারবার দাবি করেন, প্রেসিডেন্টের সন্তান হয়ে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন হান্টার।

তবে পরবর্তীতে বাইডেনের বদলে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থিতা পেলে এ বিষয়ে আলোচনা অনেকটাই কমে আসে।  

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হান্টার বাইডেন জানান, তিনি 'তার জীবনকে নতুন করে গড়ে তুলবেন এবং যারা অসুস্থ ও দুর্দশয়া আছেন, তাদেরকে সাহায্য করার জন্য নিজেকে নিবেদিত রাখবেন।'

 

Comments

The Daily Star  | English
govt employees punishment rule

Govt employees can now be punished for infractions within 14 working days

Law ministry issues ordinance amending the Public Service Act, 2018

2h ago