ভাই অ্যান্ড্রুর ‘রাজপুত্র’ খেতাব কেড়ে নিলেন রাজা চার্লস
ব্রিটেনের রাজা চার্লস এক নজিরবিহীন উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি তার আপন ভাই অ্যান্ড্রুর রাজকীয় খেতাব কেড়ে নিয়ে তাকে তার রাজকীয় বাসভবন উইন্ডসর প্রাসাদ থেকে বের করে দিয়েছেন।
আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যৌন হয়রানির দায়ে ব্যাপক সমালোচিত ও অভিযুক্ত বিনিয়োগকারী জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
চার্লসের ছোট ভাই ও প্রয়াত রানি এলিজাবেথের দ্বিতীয় ছেলে সন্তান অ্যান্ড্রুর (৬৫) বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমেছে। প্রয়াত এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ক, রাজ পরিবারের জন্য বিব্রতকর আচার-ব্যবহার—এসব কিছু মিলিয়ে এ মাসের শুরুতে তার ডিউক অব ইয়র্ক খেতাব কেড়ে নেওয়া হয়।
কিন্তু সেখানেই থামেননি চার্লস। এবার তিনি অ্যান্ড্রুর 'প্রিন্স' খেতাবও কেড়ে নিলেন। এখন থেকে তিনি ডিউক বা প্রিন্সের বদলে শুধু অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর নামে পরিচিত হবেন।
বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অ্যান্ড্রুকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাকে লন্ডনের পশ্চিমে অবস্থিত উইন্ডসর এস্টেটের রয়াল লজ ম্যানশনের ইজারা সংক্রান্ত কাগজপত্র ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে এবং অন্য কোথায় বসবাস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজপ্রাসাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, '(অ্যান্ডুর বিরুদ্ধে) এসব পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছি। তিনি তার বিরুদ্ধে আসা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন।'
'রাজপরিবারের মহামান্যরা একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চান। যেসব ভুক্তভোগী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারা (রাজপরিবারের) চিন্তায় আছে এবং আমরা তাদের পাশেই আছি। তাদের প্রতি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সমবেদনা জানানো হচ্ছে', বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজপ্রাসাদের এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র রয়টার্সকে জানান, অ্যান্ড্রু তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন।
সূত্র জানান, অ্যান্ড্রুকে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত চার্লস নিজেই নিয়েছেন। তবে পুরো রাজপরিবার এতে সমর্থন জানিয়েছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
প্রায় দুই দশক ধরে ৩০ কক্ষের প্রাসাদের ভাড়া দেননি অ্যান্ড্রু। এ বিষয়টি দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তবে সেখানে থাকার সময় তিনি বাড়ির সাজসজ্জায় সাড়ে সাত মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার) খরচ করেছেন।
এ ঘটনা প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যের অন্যান্য সংবাদমাধ্যম অ্যান্ড্রুর আর্থিক অনিয়ম নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করতে থাকে।
যুক্তরাজ্যে রাজনীতিবিদরা সাধারণত রাজপরিবারের সমালোচনা এড়িয়ে চলেন।
গত বুধবার এক বিরল ঘটনায় ব্রিটেনের একটি পার্লামেন্টারি কমিটিতে অ্যান্ড্রুর বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কেন তিনি এখনো ওই বাড়িতে থাকার অনুমতি পাচ্ছেন, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়।


Comments