ট্রাম্পের সইয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অচলাবস্থার নিরসন
টানা ৪৩ দিনের অচলাবস্থা শেষে যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারের শাটডাউন নিরসন হতে চলেছে।
গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত বিলে সই করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাধ্যমে অচলাবস্থার নিরসন হবে এবং ওয়াশিংটনের হাজারো সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী আবারও বেতন পেতে শুরু করবেন। ১ অক্টোবর থেকে তাদের অনেকেই বিনা বেতনে কাজ করে যাচ্ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
শাটডাউন বন্ধের বিলটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাস হওয়ার পর নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের কাছে পাঠানো হয়।
রিপাবলিকান পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ হাউসেও স্পষ্ট ব্যবধানে বিলের পক্ষে রায় পড়ে।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অনেক নেতা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন। তাদের বক্তব্য, দাবির পক্ষে অটল থাকতে পারেনি দল। 'বিদ্রোহী' সিনেটরদের রাশ টেনে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে দলটি। যার ফলে সাত ডেমোক্র্যাট সিনেটর ও এক স্বতন্ত্র সিনেটরের ভোটে ৪০ দিনেরও বেশি সময়ের অনড় অবস্থান নিমিষেই নড়বড়ে হয়ে পড়ে।
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বিলে সই করার সময় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কড়া সমালোচনা করেন ট্রাম্প। তিনি মার্কিনিদের এ ঘটনাগুলো মনে রাখার অনুরোধ জানান।
বিশেষত, আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য অন্তর্বর্তী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সময় 'এই গোলযোগ' মাথায় রাখা উচিৎ বলে ট্রাম্প মত দেন।
ট্রাম্প বলেন, 'আমরা আজকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছি। আমরা কখনোই এ ধরনের অন্যায্য চাপের কাছে নতি স্বীকার করব না।'
এ সময় তাকে ঘিরে ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির হাউস স্পিকার মাইক জনসন ও অন্যান্য আইনপ্রণেতারা।
ডেমোক্র্যাটদের ব্যঙ্গ করে মাইক জনসন এর আগে বলেছিলেন, 'তারা জানতেন, এতে দেশের মানুষের দুর্দশা তৈরি হবে। তারপরও তারা এটা নিয়ে এগিয়ে গেছে। পুরো ব্যাপারটাই অর্থহীন ছিল। এটি একটি ভুল ও নির্মম কাজ ছিল।'
ট্রাম্পের সই করা বিলে আগামী বছরের আগস্ট পর্যন্ত সামরিক নির্মাণ, অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের সুযোগ-সুবিধা, কৃষি দপ্তর ও কংগ্রেসের সব ধরনের খরচ অনুমোদন পেয়েছে। আর কেন্দ্রীয় সরকারের বাকি সব খরচের বরাদ্দ ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুমোদন পেয়েছে।
বিল পাসের ফলে প্রায় ছয় লাখ ৭০ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজে ফিরবেন। তাদের মধ্যে আছেন ৬০ হাজার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মী। তারা সবাই ৪৩ দিনের (যার জন্য যা প্রযোজ্য) বকেয়া বেতন পাবেন।
পাশাপাশি, শাটডাউনের সময় যারা বরখাস্ত হয়েছেন, তারাও তাদের চাকরি ফিরে পাবেন।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উড়োজাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেও সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন।
ট্রাম্পের দাবি, শাটডাউনের ফলে দেড় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। তবে এই সংখ্যা তিনি কীভাবে নির্ধারণ করেছেন, তা জানাননি।
অপরদিকে, কংগ্রেসের বাজেট কার্যালয়ের পূর্বাভাসমতে, শাটডাউনের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১৪ বিলিয়ন ডলার কমেছে।


Comments