সিলেট অঞ্চলে হাওরের ৯৬ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ

প্রতি হেক্টরে চার দশমিক এক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা।
ছবি: এনামুল হক মিলাদ

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সিলেট অঞ্চলের হাওরে মৌসুমি ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় ৯৬ শতাংশ ফসল ইতোমধ্যে কৃষকের ঘরে উঠেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, সিলেট অঞ্চলের হাওরে এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। এবার প্রতি হেক্টরে চার দশমিক এক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ছবি: এনামুল হক মিলাদ

বড়লেখা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, 'অনুকূল আবহাওয়া, উচ্চমানের বীজ ও সঠিক কৃষি পদ্ধতি এই মৌসুমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।'

'আমরা উন্নত জাতের বীজ, যেমন ব্রি-৮৯, ৯২, ৯৬, ১০০, ৫৮, ৭৪, ৮৪ ও ৮৮ ব্যবহার করেছি। প্রতি হেক্টরে গড় শুষ্ক শস্যের ওজন ছয় দশমিক ১৮ টন, গত বছর যা ছিল ছয় টন,' বলেন তিনি।

ছবি: এনামুল হক মিলাদ

অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, সিলেট বিভাগে চার লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে গভীর হাওরে রয়েছে দুই লাখ ৭৬ হাজার হেক্টর জমি। সুনামগঞ্জে দুই লাখ ২৩ হাজার হেক্টর, হবিগঞ্জে এক লাখ ২৩ হাজার হেক্টর, সিলেটে ৮৭ হাজার হেক্টর ও মৌলভীবাজারে ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে।

মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার কালনীগড়, নয়াগ্রাম, সোনাপুর ও শাহপুর এবং কুলাউড়ার জাবদা, মুক্তাজিপুর ও গৌড়করণ গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কৃষি শ্রমিকদের পাশাপাশি কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করে ধান কাটা হচ্ছে।

ছবি: এনামুল হক মিলাদ

শ্রমিকদের থাকার জন্য জমিতে খড় দিয়ে তৈরি অস্থায়ী কুঁড়ে ঘর। অনেকেই ফসল পাহারা দেওয়ার জন্য সেখানে রাত্রিযাপন করেন।

গৌড়করণ গ্রামের কৃষক সাজ্জাদ মিয়া জানান, তিনি ১০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন।

'আমি ইতোমধ্যে একটি কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করে অর্ধেকের বেশি ফসল তুলে ফেলেছি। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা। এ বছর ঝড় না হওয়ায় গত বছরের তুলনায় ফলন ভালো হয়েছে,' বলেন তিনি।

ছবি: এনামুল হক মিলাদ

মৌসুমি কর্মহীনতার কারণে বর্তমানে বেকার চা শ্রমিকরা দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে ফসল কাটার কাজে যোগ দিয়েছেন।

কৃষক পরেন্দ্র দাস বলেন, 'হাতে ধান কাটার মাধ্যমে ভালো খড় পাওয়া যায়, যা গবাদি পশুদের খাবারের জন্য অপরিহার্য। যন্ত্রে কাটা খড় পশুপালনের জন্য যথেষ্ট নয়।'

কালনীগড় বাজারে দিনের বেলায় বেশিরভাগ দোকান বন্ধ থাকার কারণে কৃষকরা খুব ভোরে মাঠে যান এবং সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসেন। সূর্যাস্তের পর দোকান খোলে।

কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, 'আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাকি কাজ এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।'

ফসল ভালো হলেও দাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মীরশঙ্কর গ্রামের কৃষক জসিম মিয়া। তিনি বলেন, 'ফসলের ন্যায্য মূল্য পাব কি না তা নিয়ে আমরা চিন্তিত।'

সিলেট বিভাগের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিনিয়র মনিটরিং অফিসার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, 'আশা করছি, এই অঞ্চলজুড়ে প্রতি হেক্টরে চার দশমিক এক টন ধানের ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

3h ago