মামলার জট বেড়েই চলেছে সুপ্রিম কোর্টে

supreme court
সুপ্রিম কোর্ট ভবন। স্টার ফাইল ছবি
  • আপীল বিভাগে ৩৭ হাজারের বেশি মামলা বিচারাধীন
  • নারায়ণগঞ্জের সাত খুন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড মামলা আপিল বিভাগে বহু বছর ধরে আটকে আছে
  • আদালতগুলোতে মোট বিচারাধীন মামলা সংখ্যা ৪৬ লাখ ৫২ হাজারে পৌঁছেছে
  • এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে বিচারক সংকটকে

শুনানি ও নিষ্পত্তিতে ধীরগতির কারণে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে মামলা জমে যাচ্ছে এবং বেশকিছু চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও রায় পেতে দেরি হচ্ছে।

সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের মামলা নিষ্পত্তি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৩০ জুন পর্যন্ত আপীল বিভাগে জমে যাওয়া মামলা সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৭ হাজার দুইটিতে। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এই সংখ্যা আট হাজার বেশি।

এই মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিডিআর হত্যাকাণ্ড, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন এবং আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার ও বিশ্বজিৎ দাসের হত্যা সংক্রান্ত আপিলও।

এসব বহুল আলোচিত ফৌজদারি মামলাগুলোর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বছরের পর বছর ধরে ঝুলে আছে আপীল বিভাগে। এগুলোর শুনানিও হচ্ছে না, নিষ্পত্তিও হচ্ছে না।

সারা দেশের আদালতগুলোতে বিচারাধীন মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ লাখ ৫২ হাজারে। এক বছর আগেও এই সংখ্যা ছিল ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার।

হাইকোর্টে মামলা জমতে জমতে ৬ লাখ ১৬ হাজারে পৌঁছেছে। নিম্ন আদালতগুলোতে এই সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ।

গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আপীল বিভাগ ২ হাজার ৭২টি, হাইকোর্ট ১০ হাজার ১৬১টি এবং নিম্ন আদালতগুলো ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৬৯টি মামলা নিষ্পত্তি করেছে।

একই সময়ে আপীল বিভাগে ৪ হাজার ৯৩টি, হাইকোর্টে ২৭ হাজার ৪৮৬টি এবং নিম্ন আদালতগুলোতে ৩ লাখ ৬৩ হাজার নতুন মামলা এসেছে।

তবে, এই সময়ে আপীল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ বেশকিছু সংবিধানগত ও রাজনৈতিক মামলা নিষ্পত্তি করেছে এবং বিচারব্যবস্থায় সংস্কার আনার উদ্যোগ নিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানায়, মামলা জমে যাওয়ার মূল কারণ হলো বিচারক সংকট। আপীল বিভাগে প্রধান বিচারপতিসহ সাতজন বিচারপতি রয়েছেন। অপরদিকে হাইকোর্টে ১১১ জন ও নিম্ন আদালতে ২ হাজার ১৮৭ জন বিচারক রয়েছেন।

হাইকোর্টের ১১১ জন বিচারকের মধ্যে চারজনকে গত বছরের ১৬ অক্টোবর থেকে বিচারিক কার্যক্রম থেকে দূরে রাখা হয়েছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করছে। এ ছাড়াও, আরও তিনজন বিচারক ব্যক্তিগত ছুটিতে রয়েছেন।

সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিম্ন আদালতকে ডিজিটাল নেটওয়ার্কের আওতায় এনে মামলা ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই উদ্যোগের অধীনে আদালত, পুলিশ স্টেশন, জেল, তদন্তকারী, সাক্ষী, আইনজীবী ও অভিযুক্তদের একটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করা হবে।

আদালতের ওপর চাপ কমাতে ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে গত জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট জাজ অ্যাপয়েন্টমেন্ট অর্ডিন্যান্স, ২০২৪ জারি করা হয়েছে।

নতুন অর্ডিন্যান্সের অধীনে গত ২৪ মার্চ হাইকোর্টের দুইজন বিচারপতিকে আপীল বিভাগে উন্নীত করা হয়েছে এবং হাইকোর্টে ২৫ জন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোয়াজ্জেম হোসেন।

তিনি জানান, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রিফাত আহমেদ নিম্ন আদালতগুলোতে মামলা নিষ্পত্তি ত্বরান্বিত করতে হাইকোর্টের বিচারপতিদের নেতৃত্বে ১৩টি মনিটরিং কমিটি গঠন করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Mother and daughter murder in Mohammadpur

Mohammadpur double murder: Mother had 30 stab wounds, daughter had at least 6

‘Didn’t recognise her in a school uniform’: Building manager recounts moment suspect walked out

8h ago