অবৈধ বালু উত্তোলনে আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ঝুঁকিতে: বিজিবি
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের বরাক নদ ও ধোবাউড়া উপজেলার নেতাই নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে সীমান্তের শূন্যরেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমানা ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আজ শনিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি ময়মনসিংহ ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মেহেদী হাসান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে হালুয়াঘাটের বরাক নদে দুটি সীমানা পিলার বিলীন হয়ে গেছে। ধোবাউড়ার নেতাই নদে দুটি পিলার বিলীনের ঝুঁকিতে আছে।
মেহেদী বলেন, ঘোষগাঁও ১১১ নম্বর মৌজায় বরাক নদ থেকে বালু উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন।
'রাতের আধারে স্থানীয় কিছু কুচক্রী মহল এবং অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা রাতের ১০৭ ও ১০৮ নম্বর মৌজা এলাকা এবং সীমান্তের খুবই সন্নিকটে শূন্যরেখার প্রায় ৫০০ গজের মধ্যে তারা বালু উত্তোলন করছে। অতি শক্তিশালী ড্রেজারের মাধ্যমে তারা রাতের বেলা বালু তুলে ট্রলার এবং ছোট ছোট ট্রলি ও ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে তারা স্থানান্তর করছে,' যোগ করেন তিনি।
শাপলাবাজার এলাকায় স্তূপ করে রাখা প্রচুর পরিমাণে বালু দেখা যায় উল্লেখ করে মেহেদী বলেন, বালু উত্তোলনের কারণে ভূমিধ্বস হচ্ছে।
টাস্কফোর্স করে যৌথ অভিযানে ট্রাক ও বালু জব্দ এবং নিলাম করেও অবৈধ বালু উত্তোলনকারী মহলটির দৌরাত্ব্য থামানো যাচ্ছে না।
'আমি মনে করি যে, এখন প্রয়োজন স্থানীয় জনগণের সচেতনতা এবং তাদের সংশ্লিষ্টতা। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমের বলিষ্ঠ কন্ঠ,' যোগ করেন তিনি।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এই বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, 'এটা অতি দ্রুত যদি আমরা বন্ধ করতে না পারি, তাহলে আমাদের সিলেটের যে ঘটনা ঘটে গেছে সাদা পাথরে, আমাদের এই ধরনের একটা পরিস্থিতি হয়তো জন্মাতে পারে। আমাদের সীমান্ত রেখা আইডেন্টিফাই করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে।'
চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিসংখ্যান তুলে ধরে মেহেদী বলেন, 'এই সময়ে আট থেকে ১০টি অভিযানে প্রায় ৩০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়েছে। গত ছয় মাসে জব্দ করা হয়েছে প্রায় এক লক্ষাধিক ঘনফুট বালু। এছাড়া প্রায় ১০০টি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।'
'দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো যে, গ্রেপ্তারের পর আসামিরা জামিনে বের আবারও এই গাড়িগুলোই ব্যবহার করে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু পরিবহনে ব্যবহার করা হয়,' বলেন মেহেদী।
এসব গাড়ি চলায় বর্ডার রোডগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এতে শিক্ষার্থী ও রোগীরা দুর্ভোগে পড়ছেন বলেও তিনি জানান।


Comments