জাতীয় নির্বাচন হতে পারে ৬-৯ জানুয়ারির মধ্যে

জাতীয় নির্বাচন
ব্যালট বাক্স। ছবি: ফাইল ফটো

নির্বাচন কমিশন ৬ থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে যেকোনো একদিন সম্ভাব্য ভোটের দিন হিসেবে করে তাদের শেষ সময়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে। তবে, অনেক রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ বলছেন, নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি।

নির্বাচন কমিশন সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, কমিশন বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য তারিখ বিবেচনা করছে। তবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটের তারিখ রেখে নভেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের দিক থেকে প্রস্তুতিমূলক সব কাজ প্রায় শেষের দিকে।'

নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান গত সেপ্টেম্বরে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে।

তবে, তিনি এটাও জানিয়েছিলেন যে ভোটগ্রহণের দিন বা অন্যান্য বিষয় তখনো চূড়ান্ত হয়নি।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং ১৩ বা ১৪ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করবেন।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনারদের দেখা করার পর তফসিল ঘোষণার রেওয়াজ আছে।

চলতি মাসের শুরুতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সঙ্গে দেখা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। কমিশনাররা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও ২৭টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।

নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ৬৫ দিন সময় রাখার পরিকল্পনা করছেন।

এই সময়ের মধ্যে কর্মকর্তারা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবেন এবং যেসব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাবে তাদের আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।

প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য প্রায় তিন সপ্তাহ সময় পাবেন।

তফসিল ঘোষণার কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

তারা আরও জানান, বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচনের দিন সকালে ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছে যাবে।

প্রস্তুতি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ১০টি নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছে, দুটি নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দিয়েছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেছে, ৪২ হাজার ৩৫০টি ভোটকেন্দ্রের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে, নির্বাচনী সামগ্রীর বেশিরভাগ জেলাগুলোতে পাঠিয়ে দিয়েছে, আইন সংশোধন করেছে, ৬৭টি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষকের অনুমোদন দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের কাছ থেকে আবেদন চেয়েছে।

চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী এই নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন।

গত শনিবার দেশের সব রাজনৈতিক দলকে সংলাপের জন্য ডেকেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে, বিএনপিসহ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর এক তৃতীয়াংশের বেশি এই সংলাপ বর্জন করে।

সংলাপে যোগ দেওয়া কয়েকটি দল জানিয়েছে যে বর্তমান পরিস্থিতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয়।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের মতে, 'দেশে রাজনৈতিক ডামাডোল চলছে এবং পরিস্থিতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয়।

নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সবাইকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সবাই আমাদের সব ধরনের সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বাসও দিয়েছেন। গত ৪ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেছে, পাশাপাশি দলগুলোর পরামর্শ ও মতামত কমিশন শুনেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে যা যা করা দরকার সবই করা হচ্ছে। সবাইকে ভোটে অংশ নেওয়ার আহ্বান থাকছে সব সময়। ভোটারদের জন্য নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে কমিশন আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকবে।'

'দলগুলোর প্রতি আহ্বান থাকবে, মতভেদ, মতানৈক্য দূর করে ভোটে আসুন। নির্বাচন কমিশন সম্মানিত ভোটারদের প্রত্যাশা পূরণকে সর্বদাই গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং ইনশাআল্লাহ আমরা সুন্দর একটা নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
FY26 Bangladesh budget subsidy allocation 2025-26

FY26 Budget: Subsidy spending to hold steady

The budget for fiscal 2025-26 is likely to be smaller than the current year’s outlay, but subsidy spending is expected to remain almost unchanged at Tk 1,15,741 crore.

9h ago