ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় রেললাইন প্রকল্প নতুন জটিলতায়

রেল লাইন
প্রতীকী ছবি

এরই মধ্যে সময়সীমা থেকে পিছিয়ে থাকা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় রেললাইন প্রকল্প আরেকটি বড় সমস্যায় পড়েছে। প্রকল্পটির এক ঠিকাদার চুক্তি বাতিল করতে চাইছে।

রেললাইন স্থাপনসহ সিভিল কাজের ঠিকাদার পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অব চায়না (পিসিসিসি) গত ১৫ মার্চ প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে একটি 'চুক্তি সমাপ্তির নোটিশ' পাঠিয়েছে। সেখানে উল্লেখ করেছে, তারা সময় মতো অর্থ পাচ্ছে না এবং প্রকল্পের জায়গাটি তাদের কাছে সময়মতো হস্তান্তর করা হয়নি।

এই ঠিকাদারের প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ এখনো অসমাপ্ত।

গতকাল বুধবার রাজধানীর রেল ভবনে রেলপথ সচিব হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, কমিটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধানে পৌঁছাতে বলেছে।

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গতকাল পিসিসিসির মূল প্রতিষ্ঠান পাওয়ার চায়নার একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে অন্য কোনো প্রকল্পে অগ্রসর হওয়ার আগে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইন প্রকল্পটি সম্পন্ন করার তাগিদ দেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ২ জন জানিয়েছেন, চীনের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব পাওয়ার চায়না পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে ভাঙ্গা-পায়রা রেললাইনে বিনিয়োগ ও নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানোর কয়েক সপ্তাহ পর প্রতিনিধি দলটি রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে।

প্রতিনিধি দলকে ২১৪ কিলোমিটার লাইনের বিস্তারিত প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে। এর জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হতে পারে বলে তারা জানিয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ৩৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় রেললাইন প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও ২ ঠিকাদার নিয়োগ করতে পারেনি রেলওয়ে। সর্বশেষ সময়সীমা গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হলেও এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৮২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে চতুর্থবারের মতো প্রকল্পের সময়সীমা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করার আবেদন করে। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ ডিপিপি সংশোধন না করে সময় বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায়।

পরে প্রকল্পটি শেষ করতে সাড়ে ৩ বছর সময় এবং অতিরিক্ত ২৭৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা চায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। পুনর্বিবেচনার জন্য প্রস্তাবটি এখন পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে প্রকল্পের নথি থেকে।

প্রকল্প নথি অনুযায়ী, পুনর্বিবেচনা প্রস্তাব অনুমোদন না হওয়ায় প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারদের অর্থ দিতে পারেনি।

প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৬৫৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং এর নতুন সময়সীমা হবে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত।

বাংলাদেশ রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ঠিকাদারের বকেয়া মাত্র ১৫ কোটি টাকা এবং তাদের কাছে ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ১১ কিলোমিটার জমি হস্তান্তর করা হয়েছে।

২৩ মার্চ প্রকল্প অফিস তাদের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিয়ে ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান জানান, বিষয়টি তারা প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে জানিয়েছেন।

তিনি গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি এবং সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছি।'

বিদ্যমান ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মিটারগেজ রেললাইন যাত্রীদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সক্ষম নয়। সে কারণেই নতুন ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

21h ago