এ অঞ্চলে মার্কিন আধিপত্য বন্ধ করতে একসঙ্গে কাজ করব: লাভরভ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সের্গেই লাভরভ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।

তিনি বলেছেন, 'আমরা পরিস্থিতি দেখে বিশ্লেষণ করি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা তথাকথিত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট, এই অঞ্চলে চীন ও রাশিয়ার অবস্থান ঠেকানো।'

লাভরভ আরও বলেছেন, 'যারা অন্যদের হুকুম করে যে কী করতে হবে তাদের অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিরোধে রাশিয়া এই অঞ্চলের অংশীদারদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করবে।'

'আধিপত্য বিস্তারকারীরা নিজেদের স্বার্থের জন্য কাজ করে থাকে,' মন্তব্য করেন লাভরভ।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় পৌঁছানোর পর রাতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।

লাভরভই প্রথম রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন।

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন শেষে এবং ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ২ দিনের সফরে আজ সন্ধ্যা ৬টা ১৭ মিনিটে ঢাকায় আসেন।

পরে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করে।

বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ বলেন, 'জাকার্তায় শীর্ষ সম্মেলনে স্পষ্ট দেখা গেছে যে কারও একার স্বার্থ সবার জন্য সুবিধাজনক নয়।'

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ পরিশোধে চীনা মুদ্রা ইউয়ান ব্যবহারের বিষয়ে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন তিনি।

লাভরভ বলেন, 'আমরা নতুন নতুন উপায়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি যেগুলো বিভিন্ন দেশের মুদ্রার ওপর ভিত্তি করে হবে এবং যে দেশগুলো এটিকে (মুদ্রা ব্যবস্থা) অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তাদের মুদ্রার ভিত্তিতে নয়।'

তিনি বলেন, 'রাশিয়া ও বাংলাদেশ এলএনজি, গম ও সার সরবরাহের বিষয়ে একটি স্থায়ী চুক্তি করার বিষয়ে আলোচনা করেছে।'

বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানির প্রথম চালান অক্টোবরে বাংলাদেশে আসবে এবং প্ল্যান্টের নির্মাণকাজ পর্যাপ্ত গতিতে এগিয়ে চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে একজন রুশ সাংবাদিক বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনকে প্রশ্ন করেন যে কেন বাংলাদেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়।

জবাবে মন্ত্রী মোমেন বলেন, 'আমাদের বৈদেশিক নীতি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা হয়। আমরা খুব ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখি। আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করি।'

তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত দিয়ে আসছি। আমাদের অবস্থান খুবই সাধারণ। আমরা এই অঞ্চলে কোনো প্রক্সি যুদ্ধ দেখতে চাই না। তাই আমরা মনে করি শান্তিপূর্ণ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করা উচিত।'

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দেওয়ায় রাশিয়ার প্রশংসা করেন মোমেন।

আগামীকাল শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে লাভরভ নয়াদিল্লি যাবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Public Service Act: Ordinance out amid Secretariat protests

The government last night issued an ordinance allowing dismissal of public servants for administrative disruptions within 14 days and without departmental proceedings.

7h ago