ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বিক্রি কম, দাম কমছে গরুর মাংসের

ইব্রাহিমপুর বাজারে নবী মিট শপে ব্যানার টানিয়ে ৬৯৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। ছবি: স্টার

রাজধানী ঢাকার কয়েকটি এলাকায় গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, কোরবানি ঈদের পর থেকে চাহিদাও কমেছে, তাই ধীরে ধীরে দাম কমছে।

গত বৃহস্পতিবার মিরপুর ১৩ নম্বর ব্যাটালিয়ন বৌ বাজার, ইব্রাহিমপুর বাজারে ব্যানার টানিয়ে ৭০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে কারওয়ানবাজারসহ অপর কয়েকটি বাজারে বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায়।

বিক্রেতারা জানান, ক্রেতারা এখন অনেক বেশি দর কষাকষি করেন। আগে যারা একসঙ্গে কয়েক কেজি মাংস কিনতেন, এখন তারা এক-দুই কেজির বেশি কিনেন না।

ইব্রাহিমপুর বাজারে নবী মিট শপে ব্যানার টানিয়ে ৬৯৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। 

দোকানের বিক্রেতা অমিত হাসান রুবেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের চারটি দোকান। প্রতিদিন তিনটি গরু কিনি। বিভিন্ন জেলা থেকে লোক নিয়ে ঘুরে ঘুরে সস্তায় কেনার চেষ্টা করি। যেহেতু আমাদের অনেক মাংস কিনতে হয়, তাই কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়।'

তার দোকানে গত এক মাস ধরে ৬৯৮ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে জানিয়ে বলেন, 'কোরবানি ঈদের আগে ৮০০ টাকায় বিক্রি করতাম। ঈদের পর থেকে দাম ধীরে ধীরে কমেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। আমাদের এখানে দাম কিছুটা কম হওয়ায় অন্যান্য এলাকা থেকেও ক্রেতারা আসে।'

'আগে কেজিতে ৪০ টাকার মতো লাভ করলেও এখন ১০-১৫ টাকা লাভ হয়। চারটি দোকান থাকায় আমাদের তেমন ক্ষতি হয় না, পুষিয়ে যায়', বলেন তিনি।

ব্যাটালিয়ন বৌ বাজারের এক বিক্রেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ১০ আগস্ট থেকে আমাদের দোকানে ৭০০ টাকা কেজিতে গরু মাংস বিক্রি হচ্ছে। আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় আমরা ব্যানার টানিয়েছি। সেজন্য অনেক ক্রেতা আসে।'

'বিক্রি বেশি হওয়ায় আমরা এই দামেও পোষাতে পারি। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় আমাদের লোক আছে। সেখান থেকে গরু আসে,' বলেন তিনি।

মাংসের মানের বিষয়ে এই বিক্রেতা বলেন, 'মাংসের মান ভালো। আমরা দেশি গরু বিক্রি করি।'

তবে সম্প্রতি গাবতলী গরুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, গরু থাকলেও বিক্রি কম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, জেলার হাটগুলোতে সরবরাহ ভালো। মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, রাজবাড়িসহ কয়েকটি জেলা থেকে ঢাকায় গরু আসে। কোরবানির পর থেকে চাহিদা কম হওয়ায় মোকামের মালিকরা গরুর দাম কমাতে বাধ্য হয়েছে।

বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাজারে গরুর দাম কমেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বিক্রি ও খাওয়ার পরিমাণও কমে গেছে। গরুর সরবরাহ আগের মতোই আছে। বেশিরভাগ কসাই বড় কসাইয়ের কাছ থেকে কাটা মাংস কিনে আনে, ২০-৩০ বা ৪০ কেজি করে। তাই হাটে যখন কোনো ক্রেতা যায়, যেহেতু আগের মতো বিক্রি হয় না, তাই দর কষাকষি হয় বেশি। ব্যবসায়ীরা তখন কম দামে বিক্রি করে।'

ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'যারা আগে সপ্তাহে একদিন গরুর মাংস কিনত এখন তারা মাসে এক-দুই দিন কিনছে। আগে যারা দুই-তিন কেজি কিনত, এখন তারা এক কেজির বেশি কিনছে না। এ কারণে দাম কিছুটা কমেছে।'

Comments

The Daily Star  | English

‘This fire wasn’t an accident’: Small business owner’s big dreams destroyed

Once a garment worker, now an entrepreneur, Beauty had an export order ready

5h ago