শহীদ মিনারে গার্ড অব অনার, হায়দার আকবর খান রনোর প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

হায়দার আকবর খান রনো
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হায়দার আকবর খান রনোকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ সোমবার সকালে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও লেখক হায়দার আকবর খান রনোকে।

সকাল সোয়া ১১টার দিকে তার মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এর আগে তার মরদেহ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কার্যালয়ে নেওয়া হলে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে শ্রদ্ধা জানান।

আজ জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বনানী কবরস্থানে বাবা ও মায়ের পাশে তাকে দাফন করা হবে

হায়দার আকবর খান রনো বেশ কয়েক বছর ধরে ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন। গত ৬ মে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয় এবং ১০ মে ভোররাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

নাতি-নাতনি বিদেশে থাকায় তার মরদেহ শমরিতা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।

হায়দার আকবর খান রনোর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সন্ধানী চক্ষু হাসপাতালে তার কর্নিয়া দান করা হয়।

দলীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে ২০১০ সালে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ছেড়ে সিপিবিতে যোগ দেন তিনি। ২০১২ সালে তাকে সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্যের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং ২০২২ সালে তাকে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা করা হয়।

১৯৪২ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন হায়দার আকবর খান রনো। ১৯৬২ সালের আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি স্বৈরাচারী শাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলার প্রথম ছাত্র নেতাদের একজন তিনি।

এ ছাড়া, তিনি ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৮০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর তিনি শ্রমিক আন্দোলনে যোগ দেন।

১৯৭০ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বৃহত্তম শ্রমিক সংগঠন ইস্ট বেঙ্গল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

তাকে চারবার কারাবরণ করতে হয়েছে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়াতে সাতবার আত্মগোপন করতে হয়েছিল।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও তিনি মার্কসবাদ, রাজনীতি, ইতিহাস, দর্শন, অর্থনীতি, সাহিত্য এবং পদার্থবিদ্যার ওপর অন্তত ২৫টি বই এবং অসংখ্য নিবন্ধ লিখেছেন।

২০২২ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। আত্মজীবনী 'শতাব্দী পেরিয়ে'র জন্য ২০০৫ সালে তাকে 'প্রথম আলো বুক অফ দ্য ইয়ার' পুরষ্কার প্রদান করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

18h ago