রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ভোলার নয়নের ফিরে আসার দাবি সঠিক না

ছবি: রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ভোলার নয়নের ফিরে আসার দাবি সঠিক নয়, সম্পূর্ণ অপপ্রচার জানিয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্ম রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ।

তাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ভোলার নয়ন বাড়ি ফিরে আসেনি। প্রকৃতপক্ষে, ভোলা জেলা প্রশাসন নয়নের পরিবারের কাছে চিঠি পাঠানোর সময় তার বাবা-মায়ের নাম ভুল উল্লেখ করে। সেই সুযোগ নিয়ে এই অপপ্রচার চালানো হয়েছে। পরবর্তীতে এক ভিন্ন ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার রিউমর স্ক্যানার জানায়, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. নয়ন গত আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন এবং ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সম্প্রতি তার মৃত্যুকে ঘিরে ফেসবুকে অপপ্রচার লক্ষ্য করা যাচ্ছে—বিভিন্ন পোস্টে এক দম্পতির ছবি পোস্ট করে লেখা হচ্ছে, 'জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শহীদ নয়ন বাড়িতে ফিরে এসেছেন। মৃত্যুর চারমাস পর সদ্য সাবেক বিধবা স্ত্রীর সাথে হাসিমুখে নয়ন ভাইয়ের ছবি।'

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৩০ নভেম্বর ভোলা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ভোলার আহত ও শহীদদের স্মরণে তাদের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে পাঠানো চিঠিতে নয়নের বাবা ও মায়ের নাম ভুল হয়।

নয়নের বাবার নাম মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম এবং মায়ের নাম মমতাজ বেগম। তবে চিঠিতে বাবা এবং মায়ের নামে জায়গায় মো. আনসার মিয়া ও রিজিয়া বেগম উল্লেখ করা হয়। মূলত চিঠিতে ভুলবশত নয়নের বাবা-মায়ের নামের জায়গায় একই ওয়ার্ডের বাসন্দিা আরেক নয়নের (প্রবাসী) বাবা-মায়ের নাম লেখা হয়। ভোলার এক ব্যক্তি এই ভুলটি তার ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরেন, সেই পোস্টে ওই চিঠি, নয়নের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপির ছবি এবং তার জন্ম সনদের ছবি জুড়ে দেন।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, শুরুতে কেবল টেক্সট এবং চিঠির ছবি ব্যবহৃত হলেও পরবর্তীতে এক দম্পতির ছবি যুক্ত করে অপপ্রচার চালানো হয়। তবে সরকারি বা বেসরকারি সব ধরনের অনুদান প্রকৃত নয়নের পরিবারের কাছে পৌঁছেছে।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উঠে আসে, বিভিন্ন পোস্টে এক দম্পতির ছবি ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে, সেই ছবির ব্যক্তি নয়ন নন। প্রকৃতপক্ষে, ছবির ব্যক্তি হচ্ছেন অহিদুজ্জামান সাকিব নামে ভিন্ন একজন। গত ২৬ নভেম্বর অহিদুজ্জামান সাকিব তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তার স্ত্রীর সঙ্গে ছবিটি পোস্ট করেছিলেন।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে প্রবাসী নয়নের মা বলেন, 'নিহত নয়নের বাড়ি আর আমার বাড়ি একই ওয়ার্ডে হওয়াতে ভুলে নিহত নয়নের বাবার নামের পরিবর্তে আমার স্বামীর নাম চলে এসেছে, তবে কোনো টাকা পয়সা আমরা পাইনি। কে বা কারা গুজব ছড়াচ্ছে যে নিহত নয়ন বেঁচে ফিরছে। যারা গুজব রটাইছে তাদের বিচার দাবি করছি।'

পরবর্তীতে ওই সাংবাদিকের গত ৯ আগস্টের ফেসবুক পোস্টসহ একাধিক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্ট থেকে নয়নের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার। এ ছাড়া, অনুসন্ধানে ১০ আগস্ট নয়নের নামাজে জানাজার ছবি এবং ভিডিও খুঁজে পাওয়া গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Political parties with phantom addresses queue for EC nod

In its application for registration with the Election Commission, Janatar Bangladesh Party has said its central office is located on the 12th floor of Darus Salam Arcade near the capital’s Paltan intersection.

1d ago